খামারী প্রণোদনায় নয়/ছয়, সবচেয়ে বেশী ধাপেরহাটে (ভিডিও)
বিশেষ প্রতিবেদক
আপডেট :
রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ক্ষুদ্র খামারিদের প্রণোদনা প্যাকেজে নয় ছয়ের অভিযোগ। ক্ষুদ্র খামারিদের করোনা কালীন ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করে এলডিডিপির আওতায় ৫ টি ক্যাডাগরি অনুযায়ী ক্ষুদ্র ডেইরি ও পোল্ট্রি খামারিদের মনোবল বাড়ানো ও আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনার প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।
উপজেলার ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের এলডিডিপির দায়িত্ব প্রাপ্ত এল এস পি কর্মী ও একটি দালাল চক্র অর্থের বিনিময়ে প্রকৃত ক্ষুদ্র খামারিদের খামারের ছবি ব্যবহার করে খামারবিহীন ব্যক্তিকে প্রণোদনার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ সরকারি টাকা। ক্ষুদ্র খামারীদের প্রণোদনার অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে।দালাল চক্র নকল খামারীদের নামে নতুন মোবাইলের সিম ক্রয় করে নিজেদের নিকট রেখে দিয়েছে এবং ইচ্ছে মত পিন কোড বসিয়ে ১০/২০ জনের নামের টাকা তুলে নিয়েছে।
ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে প্রকৃত ক্ষুদ্র খামারিরা অনুদানের অর্থ না পাওয়ায় ও খামার বিহীন ব্যক্তি প্রণোদনার অনুদানের অর্থ পাওয়ায় ফুসে উঠেছে প্রকৃত খামারিরা।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে দেখা যায় প্রকৃত খামারিরা প্রণোদনার অনুদান না পাওয়ায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করছে। অফিসের দায়িত্বরত অফিসার ও কর্মচারীরা উত্তেজনা এড়াতে বিভিন্ন যুক্তি পরামর্শ প্রদান করছে আগত প্রকৃত ক্ষুদ্র খামারিদের।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের ৮ জন প্রকৃত খামারি অনুদান না পাওয়ায় উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসারের বরাবর ২২ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ দাখিল করে।
এমন একাধিক মৌখিক ও লেখিত অভিযোগের সূত্র ধরে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে চলে *দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির সরেজমিনে অনুসন্ধান।
ধাপেরহাট,ইদিলপুর ,খোর্দ্দকোমরপুর, ভাতগ্রাম, জামালপুর,ফরিদপুর, বনগ্রাম রসুলপুর দামোদরপুর ইউনিয়নের খামারের অনুদান পাওয়া ও অনুদান না পাওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।এবং দালালদের ভয়ে আবার কেউ কেউ মুখ খুলতে নারাজ।
সাদুল্লাপুরে ১১ টি ইউনিয়নের খামারীদের প্রণোদনা, সবচেয়ে নয়/ ছয় হয়েছে ধাপেরহাটে। ইউনিয়নের দায়িত্ব রত এল এস পি কর্মী তৌহিদা আক্তার তরু একাধিক দালালের সহযোগিতায় অর্থের বিনিময়ে প্রকৃত খামারিদের খামারের ছবি ব্যবহার করে খামার বা গরু নেই এমন ব্যক্তিকে প্রণোদনায় অন্তর্ভুক্ত করে অনুদানের অর্থ তুলে নিয়েছে।
অনুসন্ধান কালে ধাপের হাট ইউনিয়নে ১৫ হাজার টাকা করে প্রণোদনার অনুদানের টাকা পাওয়া দুই সহদর ভাই ধাপেরহাটের মধ্য নিজপাড়া গ্রামের কলিম উদ্দিনের পুত্র আজাদুল ইসলাম ও হীরু মিয়ার গরু বিহীন সেডের ছবি ধারণ করতে গেলে উভয়ই প্রতিবেদকে ছবি ধারণে বাঁধা প্রদান করে।
অপরদিকে প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ না করতে মোটা অংকের উৎকোচদানে অনবরত বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে।
তাঁতীপাড়া ছাইগাড়ী, মধ্য নিজ পাড়া গ্রামের তিনের অধিক দালাল ১৫/২০ জন করে নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তুলে নিয়েছে অনুদানের টাকা এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
তাঁতী পাড়ার আইয়ুব মাস্টারের ছেলে লিখন তার স্ত্রী, পিতা চাচা, শাশুড়ী প্রতিবেশী ৮/১০ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে প্রত্যকের নিকট থেকে তাদের মোবাইলে আসা অর্থের অর্ধেকের বেশী হাতিয়ে নিয়েছে। এমন কি অনুদানের টাকার অর্ধেক টাকা না দেয়া কেড়ে নিয়েছে মোবাইল।এনিয়ে হয়েছে গ্রামে শালিসি।
এবিষয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রাণী সম্পদ অফিসার আরিফুর রহমান কনক বলেন, প্রণোদনা নয় ছয়ের লিখিত /মৌখিক অভিযোগের গুলো ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্হা নেওয়া হবে ও যেসকল প্রকৃত খামারি বাদ পড়েছে তাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যেই উপজেলায় ১ হাজার ৬ শত ৬২ জন খামারির তালিকা প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয় পাঠিয়াছি। তাদের মধ্যে থেকে অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং এ প্রণোদনার অনুদান পাচ্ছেন ।এ পর্যন্ত কতজন খামারী অনুদান পেয়েছে এমন তথ্য এ মুহূর্তে আমাদের নিকট নেই।
উপজেলা বাসীর দাবি প্রকৃত ক্ষুদ্র খামারিদের তালিকা তৈরী করে প্রণোদনার ব্যবস্হা করন ও যারা প্রণোদনায় নয় ছয় করে সরকারের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেন।