সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যা মামলা থেকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানেকে দায়মুক্তি দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) এ দায়মুক্তি ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জামাল খাশোগির সাবেক বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনের একটি আদালতে এ মামলার বিচারকাজ চলছে। এখন সে মামলার অভিযুক্তদের তালিকা থেকে সৌদি যুবরাজের নামটি কেটে দেওয়া হবে।
২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেট থেকে খাশোগিকে হত্যা করা হয়। পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে উঠে আসে, এ হত্যাকাণ্ডে মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশ ছিল।
মার্কিন প্রশাসনের এমন রায় প্রকাশের পরপরই টুইটারে খাশোগির সাবেক বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিস লেখেন, জামাল আজ আবার মারা গেলো। আমরা ভেবেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্র এ হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার করবে, কিন্তু স্বার্থ ও টাকার কাছে তারাও হেরে গেলো।
এদিকে, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের সৌদি দূতাবাস থেকে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে হোয়াইট হাউজের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক মুখপাত্র লিখিত বিবৃতিতে জানান, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগের আইনজীবীদের দাবি, দেশটির আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে- কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের বিচার যুক্তরাষ্ট্র করতে পারে না। যেহেতু মোহাম্মদ বিন সালমান এখন সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন, তাই প্রচলিত আইন অনুযায়ী তিনি নিজের পদাধিকারবলেই এ মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার অধিকার রাখেন।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ রাষ্ট্রীয় ডিক্রির মাধ্যমে মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বানান।
জামাল খাশোগি হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথম থেকেই অস্বীকার করে আসছিলেন সৌদি যুবরাজ। যদিও পরবর্তীতে সালমান জানান, এ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানতেন তিনি।
সাংবাদিক জামাল খাশোগি সৌদি আরবের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর কট্টর সমালোচক ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াশিংটন পোস্টে তিনি সৌদি বাদশাহ ও যুবরাজের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনামূলক কলাম লিখতেন।
২০১৮ সালে বাগদত্তা হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আনতে ইস্তাম্বুলের সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন খাশোগি। সেখান থেকে আর কখনোই তাকে বের হতে দেখা যায়নি।
‘ডেমোক্রেসি ফর দ্য অ্যারাব ওয়ার্ল্ড নাও’ এর মুখপাত্র সারাহ লি হুইটসন বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে, জো বাইডেনের একক প্রভাবে মোহাম্মদ বিন সালমানকে এ মামলা থেকে দায়মুক্তি দেওয়া হলো। অথচ বাইডেনই বলেছিলেন, সৌদি যুবরাজ যাতে জবাবদিহিতা থেকে বাঁচতে পারেন, তার জন্য সবকিছু করবেন।