গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেছেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মাধ্যমে যেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি সেটা নিশ্চিত করব। ভোটকেন্দ্রের আশপাশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মোবাইল ফোর্স, স্ট্রাইকিং ফোর্স, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। এটা একটা সমন্বিত প্রয়াস। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমাদের মূল উদ্দেশ্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা। জনগণ আসবে, সুষ্ঠু-সুন্দরভাবে ভোট দিয়ে চলে যাবে। আমরা দেখিয়ে দিতে চাই। পুরো গাজীপুরসহ সারা বিশ্বের লোকজন তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে, আমরা যেন একটি ভালো ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা ব্রিফিং অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
জিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা বুধবার পর্যন্ত সুন্দরভাবে চলে আসছি। কাল নির্বাচনের দিন আপানারা যাতে সুন্দরভাবে দেশবাসীকে খবর জানাতে পারেন সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করবো। সিটি নির্বাচনে ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং ৩৫১টি কেন্দ্রে আমরা আলাদাভাবে গুরুত্ব দেবো।
নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে জিএমপি কমিশনার বলেন, প্রিজাইডিং অফিসারের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আছে। যে কোনো বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসার যোগাযোগ করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। ভোটকেন্দ্র সঠিকভাবে আছে কিনা, নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি আছে কিনা, কোথায় নিরাপত্তার ঝুঁকি, এসব বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। আমাদের পারস্পারিক যোগাযোগের মাধ্যমে আমরা যাতে নির্বাচনটা সঠিকভাবে করতে পারি।
যখন ভোটগ্রহণ শুরু হবে, তখন সবাই যাতে লাইনে দাঁড়াতে পারে, কেউ যেন পেশী শক্তি ব্যবহার করতে না পারে, কেউ যাতে ও মাস্তানি করতে না পারে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে। ভোটার ও জনগণের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। আমাদের অনেক মা-বোনেরা আছেন, তাদের সঙ্গে সুন্দর ব্যবহার করতে হবে। অনেক ভোটার আসবে হয়তো চোখে দেখে না, হাঁটতে পারে না, যেভাবে সাহায্য করা যায় সাহায্য করবেন।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনসহ সকল বাহিনী সিটি নির্বাচনকে সফল করার জন্য কাজ করছে। নির্বাচন কমিশনসহ সকলের একটাই চাওয়া- সবাই যেন কমিশনকে সহযোগিতা করে। সকলের সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা যেন গাজীপুরে মডেল নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারি। সিটি নির্বাচনে ৫ স্তরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করে গাজীপুরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
এজেন্ট বের করে দেওয়া হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা যে রকম আশঙ্কা করছেন সবগুলো বিষয় আমাদের নজরে আছে। এগুলো মাথায় রেখে আমরা সব পরিস্থিতি বিবেচনা করছি এবং সেই ভাবেই আমরা কাজ করছি। যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাদের নজরে আসে তাৎক্ষণিক আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে এবং ওই প্রার্থীর এজেন্টকে আমরা কেন্দ্রে অবস্থান নিশ্চিত করবো। আইনের মধ্যে থেকে যে সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা আমরা তা নিশ্চিত করব।
জিএমপির উপ-কমিশনার (এসবি) আবুল বাশার মো. আতিকুর রহমান জানান, নির্বাচনে ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতিটি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ন, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে ৪ হাজার ৮০০ গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও নগরীর ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ২০ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাব মোতায়েন থাকবে।
নিরাপত্তা ব্রিফিং অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান, জিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ, অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. জিয়াউল হক, বিজিবির মেজর মো. ইকবাল, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের উপ-কমিশনার ইব্রাহিম হোসেন, গাজীপুর জেলা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা (ডিস্ট্রিক অ্যাডজুটেন্ট) আশরাফুল ইসলামসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।