গোলাম রব্বানী: গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কুশলী ইউনিয়নের চর-কুশলী গ্রামে ৮ বছর পর শশুর বাড়ি বেড়াতে এসে রাত প্রায় সাড়ে বারটায় খুন হয় বিল্লাল গাজী। খুনিরা বিল্লাল গাজীকে কলাবাগানের ভিতরে মেরে লাশটি টানতে টানতে এনে তাদের বাড়িতে বেঁধে রাখে।
আজ দুপুর ১২টা বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন গোপালগঞ্জ ও দৈনিক ভোরের বানীর শাখা কার্য়ালয়ে বিল্লাল হত্যা মামলার বাদী স্ত্রী এছমোতারা বেগম এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি বলেন, আমি আজ আপনাদের সামনে এক কষ্টে ভরা ক্লান্ত মন নিয়ে হাজির হয়েছি, আজ আমি একজন বিধবা নারী তবে কিছু দিন আগেও এমনটা ছিল না। আমি আমার স্বামী এবং সন্তানদের নিয়ে পরম সুখে-শান্তিতেই বসবাস করতেছিলাম তবে গত ০৭/০৪/২০২৪ ইং তারিখে শত্রুদের নির্মম পাষন্ডতায় হারাতে হয় আমার স্বামীর জীবন আর বিধবা হতে হয় আমাকে এবং পিতৃ হারা হয় আমার একমাত্র ৭/৮ বছরে সন্তানকে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী বিল্লাল গাজীকে নিয়ে আমি দীর্ঘদিন যাবত প্রতিবেশি দেশ ভারতে বসবাস করিয়া আসিতেছি। তবে আমি আমার স্বামীকে নিয়া মাঝে মধ্যে আমার বাবার বাড়ী চরকুশলী বেড়াতে আসি এরই ধারাবাহিকতায় রোজার শুরুর দিকে ঈদ উদযাজনের জন্য আমার স্বামী বিল্লাল গাজীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসি। বাবার বাড়ি আসার পরে গত ০৭/০৪/২০২৪ ইং তারিখ রোজ রবিবার দুরবৃত্তরা পূর্ব শত্রুতার জেরে হঠাৎ আমার বাবার বাড়ি এসে আমার স্বামীকে ডাকা-ডাকি করে। এমন সময় আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের দরজা খুলে ইলেকট্রিক লাইট জ্বালিয়ে দেখি একসাথে ৪/৫ লোক লাঠি-সুঠা নিয়ে আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে আমার স্বামী বিল্লাকে খুজা-খুজি করতেছে।
এমনসময় আমি তাহাদের অবস্থার বেগতিক দেখে আমার স্বামীর জীবন বাচানোর জন্য পিছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে যেতে বলি। আমার স্বামী বেড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শত্রুরা তাহাকে হত্যার উদ্যেশে তার পিছনে ধাওয়া করে এবং একপর্যায়ে আমার স্বামী যখন দৌড়ে কলা বাগানের দিকে যায় সেখানে আরো ৫/৬ জন লোক আগের থেকে উপস্থিত ছিল।
আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে (১) নান্নু মোল্লা, পিতা- ফজর মোল্লা, গ্রাম- চর কুশলি (২) মোহম্মাদ সিকদার, পিতা- নুর হোসেন শিকদার, গ্রামঃ কুশলী দক্ষিণপাড়া (৩) আলমগীর মোল্লা, (৪) আনু মোল্লা, উভয় পিং- আকরাম মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলি, (৫) বুলবুল ওরফে বুলু পিং- খোকা মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলী, (৬) ইমন মোল্লা, (৭) তরিকুল মোল্লা ওরফে তরিক, উভয় পিং- নান্নু মোল্লা, গ্রামঃ চর কুশলি, (৮) সাহেদা, স্বামীঃ আকরাম মোল্লা, (৯) বিথী, স্বামীঃ আলমগীর মোল্লা, (১০) রেহানা, স্বামী সরোয়ার, (১১) রুপা আক্তার, পিং- সরোয়ার মোল্লা, সবং সাং- চর কুশলি, উপজেলাঃ টুঙ্গিপাড়া, জেলাঃ গোপালগঞ্জ।
ওরা আমার স্বামী সবাই নির্মম ভাবে হত্যা করে তাকে তাদের নিজ বাড়িতে টেনে হিচড়ে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ এসে হত্যাকারীদের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
এ ব্যপারে টুঙ্গিপাড়া থানায় নিহত বিল্লালের স্ত্রী এছমোতারা বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।