গোলাম রব্বানী: গোপালগঞ্জে এন্টিভেনমের অভাবে সাপে কাঁটা রোগীকে রেফার্ডে চরম ক্ষোভ প্রকাশ সারা দেশের ন্যায় গোপালগঞ্জেও রাসেল’স ভাইপার সহ বিষাক্ত সাপের আনাগোনা বেড়েছে। ইতিমধ্যেই বিষাক্ত সাপের কামড়ে বেশ কয়েকজন আক্রান্ত হয়েছেন এদের মধ্যে এক শিশু মারা যাওয়ার খবরও পাওয়া গিয়েছে।
শনিবার (২২ জুন) সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকায় বিষাক্ত সাপের কামড়ে আব্দুল্লাহ (৩০) নামে এক ব্যক্তির আক্রান্তের খবর পেয়ে গোপালগঞ্জ হিউম্যান সোসাইটি নামের একটি মানবিক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী কর্মীরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাকে এন্টিভেনম দেওয়াসহ জরুরি চিকিৎসা সেবা দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এসময় বিষাক্ত সাপে কাঁটা অপর আরেকটি রোগীকে স্টকে পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম না থাকায় খুলনায় রেফার্ড করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে রোগীর স্বজনদের মাঝে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। যেহেতু সারা দেশের ন্যায় গোপালগঞ্জেও রাসেল’স ভাইপার সহ বিষাক্ত সাপের উপদ্রব বেড়েছে। তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের এলাকায় যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম না থাকে তাহলে এর চেয়ে দুঃখের আর কি হতে পারে? এমনটি মন্তব্য সাপে কাঁটা রোগীর স্বজনদের।
এদিকে শনিবার সকালে বিষাক্ত সাপে কাঁটা রোগী আব্দুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো গোপালগঞ্জ হিউম্যান সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবী কর্মী মোঃ সাজিদ আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, গোপালগঞ্জের মতন জায়গায় এন্টিভেনমের স্বল্পতায় রোগী মারা যাবে, রোগীকে অন্যত্র রেফার্ড করা হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমি গোপালগঞ্জের সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও গোপালগঞ্জের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিম মহোদয়ের নিকট এ জেলায় দ্রুত পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম পাঠানোর জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ জিল্লুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে এন্টিভেনমের পর্যাপ্ততা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালে সাপে কাঁটা এক রোগীকে এন্টিভেনমের এক ডোজ দিয়ে খুলনা রেফার্ড করা হয়েছে। অপর আরেকটি সাপে কাটা রোগীকে এন্টিভেনমের এক ডোজ দেওয়া হয়েছে। শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে তার চিকিৎসা চলছে।
এবিষয়ে শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ইতোপূর্বে অত্র হসপিটালে কোন এন্টিভেনম সংগ্রহে ছিলো না। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে গোপালগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়ের সাথে কথা বলে ওখানে সংরক্ষিত বেশ কয়েকটি এন্টিভেনম আমাদের হাসপাতালে এনে বিষাক্ত সাপে কাঁটা রোগীদের জরুরী চিকিৎসায় প্রদান করি।
এ মুহূর্তে আমাদের সংগ্রহে আর কোন এন্টিভেনম নেই। আমি ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করে জরুরি ভিত্তিতে গোপালগঞ্জে এন্টিভেনম পাঠানোর চাহিদাপত্র দিয়েছি। হয়তোবা রোববার-সোমবার নাগাদ আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম হাতে পাবো। এসময় পরিচালক ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ সকলকে সতর্কতার সাথে চলাফেরা করা এবং বিষাক্ত সাপে কাঁটা রোগীকে দ্রুত উদ্ধার করে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন তিনি।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর নিকট গোপালগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রাসেল’স ভাইপার ও অন্যান্য বিষাক্ত সাপে কাঁটা রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় অতি দ্রুত পর্যাপ্ত পরিমাণে এন্টিভেনম পৌঁছে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন গণমাধ্যমকর্মী সহ সচেতন মহল।