গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের জমিতে ইপিজেড করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন সাঁওতাল নেতারা। এরপরও ইপিজেড নির্মাণের চেষ্টা করা হলে আন্দোলনের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় গাইবান্ধা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাঁওতাল নেতারা এসব ঘোষণা দেন।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ ও নাগরিক সংগঠন জনউদ্যোগ যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক হরেন্দ্র নাথ সিং, প্রাণবৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সদস্য খোকন সুইটেন মুরমু, আদিবাসী বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, গাইবান্ধা জনউদ্যোগের আহ্বায়ক জহুরুল কাইয়ুম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, উন্নয়নের জন্য ইপিজেড স্থাপন এলাকার মানুষের জন্য অবশ্যই সুখবর। কিন্তু সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্মের বিরোধপূর্ণ সাঁওতালদের জমিতে ইপিজেড স্থাপনের ঘোষণা সাঁওতালদের হতাশ করেছে। এ জমিতে ইপিজেড স্থাপনের বিরোধিতা করে আন্দোলন করছেন তাঁরা।
বক্তারা দাবি করেন, ২০০৪ সালে রংপুর চিনিকলটি বন্ধ হওয়ার পর চিনিকল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় প্রভাবশালীদের মধ্যে সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম এলাকার ১ হাজার ৮৪২ একর জমি অবৈধভাবে লিজ দিয়েছে।
এরপর ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর চিনিকল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা উচ্ছেদের নামে নিরীহ সাঁওতালদের ওপর হামলা, বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং গুলিবর্ষণ করে। হামলায় তিনজন সাঁওতালকে গুলি করে হত্যা এবং ১৭ জনের বেশি গুরুতর জখম হন। গত পাঁচ বছরে এই হত্যার বিচার হয়নি।
অবিলম্বে বাগদা ফার্মের রিকুইজিশন করা জমি সাঁওতালদের ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় সাঁওতাল ও বাঙালি পরিবারের স্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানান তাঁরা।
এসব বিষয়ে রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল কবির বলেন, এখানে ইপিজেড হলে অসংখ্য শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। এখানকার উৎপাদিত পণ্যের ৯০ ভাগ বিদেশে রপ্তানি হবে। দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। সেখানে সাঁওতালদেরও কর্মসংস্থান হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তবে জমি ফেরতের কোনো সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।