সোমবার রাতে বরিশালের গৌরনদীতে স্বামী এক পূত্র ও দুই পুত্রবধুর হাতে হেরোনা বেগম (৬৩) নামের এক বৃদ্ধা নারী খুন হওয়ার চাঞ্চল্যকর খবর পাওয়া গেছে। নিহতের স্বজন, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার নলচিড়া ইউনিয়নের চর দিয়াশুর গ্রামের হায়দার আলী প্যাদার স্ত্রী বৃদ্ধা হেরোনা বেগম (৬৩)কে সোমবার দিবাগত গভীর রাতে খুন করে তার গলায় দড়ি বেধে নিজেদের বসত ঘরের অদুরের একটি টয়লেটের সিলিং এর সাথে হাটু ভাজকরা অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর মঙ্গলবার ভোরে নিহতের ছোট ছেলে সুমন প্যাদা গৌরনদী মডেল থানা পুলিশকে খবর দেয় যে তার মা আত্বহত্যা করেছে। অপর দিকে নিহতের স্বামী হায়দার আলী প্যাদা (৬৫), ছোট ছেলে সুমন প্যাদা (৩২) ও তার স্ত্রী সুচনা আক্তার (২৫) এবং বড়ছেলে প্রবাসী বাচ্চু প্যাদার স্ত্রী আখি বেগম (৩০) মিলে গ্রামবাসী ও স্বজনদের জানায় বৃদ্ধা হেরোনা বেগম আত্বহত্যা করেছে। কিন্তু লাশের সুরত হাল করতে গিয়ে নিহত বৃদ্ধার মাথায় যখমের চিহ্ন দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। তারা নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠায়। একই সময় পুলিশ নিহতের স্বামী হায়দার আলী প্যাদা (৬৫), ছোট ছেলে সুমন প্যাদা (৩২) ও তার স্ত্রী সুচনা আক্তার (২৫) এবং বড়ছেলে প্রবাসী বাচ্চু প্যাদার স্ত্রী আখি বেগম (৩০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসে। খবর পেয়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাগন মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগে নিহতের ভাই মনির সিকদার জানান, তার ভগ্নিপতি হায়দার আলী প্যাদা বয়সের ভারে রোজগারে অক্ষম হয়ে পড়লে দুই ছেলের রোজগারে তাদের ভরন পোষন চলত। ফলে নানা ছল ছুতায় তার বড় ভাগ্নে প্রবাসী বাচ্চু প্যাদার স্ত্রী আখি বেগম, ছোট ভাগ্নে সুমন প্যাদা ও তার স্ত্রী সুচনা আক্তার মিলে প্রায়ই তার বোন নিহত হেরোনা বেগমকে শারীরিক নির্যাতন করত। গত তিনদিন পূর্বেও তারা হেরোনা বেগমকে মারধর করেছিল। খবর পেয়ে তিনি ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসে ঘটনা মিটমাট করে দেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় নিহত বৃদ্ধার ভাই মো. মনির হোসেন সিকদার বাদী হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের স্বামী হায়দার আলী প্যাদা, ছোট ছেলে সুমন প্যাদা ও তার স্ত্রী সুচনা আক্তার এবং প্রবাসী বড়ছেলে বাচ্চু প্যাদার স্ত্রী আখি বেগমকে আসামী করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটককৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কিছু জানা গেলে বা ময়না তদন্ত শেষে আমরা পরবর্তি আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করব।