গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু হচ্ছে সোমবার (২১ মার্চ)। ২৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত চলবে এ শুনানি।
সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে প্রস্তাব দেয়।
কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবের পর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট একটি পর্যবেক্ষক দল তা যাচাই করে গণশুনানির সূচি নির্ধারণ করে।
বিইআরসি আইন অনুযায়ী, গ্যাস খাতের অংশীজনের মধ্যে আগ্রহী প্রতিনিধিদের গণশুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে কমিশন। শুনানি শেষে ৯০ দিনের মধ্যে পর্যবেক্ষক দল তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
এদিকে বিইআরসি যদি গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রস্তাব গ্রহণ করে, তাহলে রান্নার জন্য দুই চুলার সংযোগ ব্যয় ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে দুই হাজার ১০০ টাকা হবে। আর এক চুলার ব্যয় ৯২৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে দুই হাজার টাকা হবে।
এদিকে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সভায় গ্যাস কোম্পানিগুলোর প্রস্তাবিত দাম অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, ১১৭ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব অযৌক্তিক। কারণ গ্যাসের কোম্পানিগুলো লোকসানে নেই।
তিনি বলেন, এখন হঠাৎ করে ভর্তুকি তুলে দাম বাড়ালে আমাদের অর্থনীতিতে ধস নামবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। গ্যাসের দাম বাড়ানোয় যে গণশুনানি হবে, সেখানে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক তথ্য দেয়নি। বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে যতগুলো কোম্পানি আছে, তারা সবাই কিন্তু লাভ করছে।
এর আগে বিইআরসি কার্যালয়ের সামনে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও অবস্থান কর্মসূচিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, বিইআরসি শুধু গণশুনানির নামে একটি নাটক সাজায়। দেশের সব পণ্যের দাম এখন বাড়তি। এই মুহূর্তে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়, তাহলে সেটি জনগণের ওপর ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ছাড়া আর কিছুই হবে না।
সরকার আসলে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) ভর্তুকি জনগণের ঘাড়ে চাপানোর পায়তারা করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।