মহামারীর বাধা আর সংঘাত-সহিংসতা পেরিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ভোট দিচ্ছেন বন্দরনগরীর বাসিন্দারা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ বা সংরক্ষিত কোনো ওয়ার্ডেই কাউন্সিলর পদে জয়ী হতে পারেননি বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা।
এ নির্বাচনের ৩৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৮টি ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এর সাতটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আর ৩১টিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন।
নারীদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের একটি ছাড়া বাকি ১২টিতেও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
দুটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত থাকায় ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ড এবং সংরক্ষিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হয়নি।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার ওপর নির্ভর করে এ দুটি ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হবে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৩ ও সাধারণ ওয়ার্ড ৩৩, ৩৪, ৩৫ এর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা বুলবুল আহাম্মেদ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল। সে কারণে আমরা কমিশনে চিঠি দিয়েছি। কমিশনের নির্দেশনা পেলে ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ও সংরক্ষিত ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফল ঘোষণা করা হবে।”
১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হারুনর রশিদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন, যিনি গতবারও কাউন্সিলর ছিলেন।
এছাড়া ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ও গতবারের কাউন্সিলর তারেক সোলায়মান সেলিমের মৃত্যুতে সে ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণ হয়নি।
বুধবার রাত পৌনে ৩টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন থেকে ৩৯টি সাধারণ ওয়ার্ডের ২৪টি এবং ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মধ্যে নয়টির আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হয়। বাকিগুলোর আনুষ্ঠানিক ফলাফল জানানো হয় বৃহস্পতিবার বিকালে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে সাহেদ ইকবাল বাবু, ৩ নম্বর পাঁচলাইশ ওয়ার্ডে মো. শফিকুল ইসলাম, ৪ নম্বর চান্দগাঁও ওয়ার্ডে মো. এসরারুল হক, ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে মোহাম্মদ জহুরুল আলম জসিম, ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে মো. ইলিয়াছ, ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ডে হাসান মুরাদ বিপ্লব এবং ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডে মোর্শেদ আলী বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে গাজী মো. শফিউল আজিম, ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডে কাজী নুরুল আমিন, ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে এম আশরাফুল আলম, ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডে মোবারক আলী, ৮ নম্বর শুলকবহর ওয়ার্ডে মো. মোরশেদ আলম, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডে নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, ১১ নম্বর দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে মো. ইসমাইল বিজয়ী হয়েছেন।
১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ডে মো. নুরুল আমিন, ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ডে গিয়াস উদ্দিন, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শহিদুল আলম জয় পেয়েছেন।
১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডে মো. নুরুল আলম, ২০ নম্বর দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডে চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনি, ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে শৈবাল দাশ সুমন, ২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে সলিম উল্লাহ বাচ্চু, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে মো. জাবেদ, ২৪ নম্বর উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে নাজমুল হক ডিউক, ২৫ নম্বর রামপুরা ওয়ার্ডে আব্দুস সবুর লিটন, ২৭ নম্বর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে মো. শেখ জাফরুল হায়দার চৌধুরী জয়ী হয়েছেন।
এছাড়া ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে নজরুল ইসলাম বাহাদুর, ২৯ নম্বর পশ্চিম মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে আতাউল্লাহ চৌধুরী, ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে জহর লাল হাজারি, ৩৫ নম্বর বক্সীর হাট ওয়ার্ডে হাজী নুরুল হক, ৩৭ নম্বর উত্তর মধ্যম হালিশহরে আব্দুল মান্নান, ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডে গোলাম মো. চৌধুরী, ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহরে জিয়াউল হক সুমন, ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডে আব্দুল বারেক, ৪১ নম্বর দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ডে ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন।
নারীদের জন্য সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ফেরদৌস বেগম মুন্নী জয়ী হয়েছেন।
বাকি ওয়ার্ডগুলোতে জয়ী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন- ২ নম্বর ওয়ার্ডে জোবাইরা নার্গিস, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জেসমিন পারভীন জেসি, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে তছলিমা বেগম নূরজাহান, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আঞ্জুমান আরা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শাহীন আক্তার রোজী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে রুমকি সেন গুপ্ত, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে নীলু নাগ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জাহেদা বেগম পপি, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে হুরে আরা বেগম, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ফেরদৌসী আকবর, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে আফরোজা জহুর এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে শাহানুর বেগম।