কক্সবাজারের মহেশখালীর ভাসমান টার্মিনাল থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়।
আজ শনিবার (২০ জানুয়ারি) এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না-হলেও দুপুরের পর থেকে গ্যাসের চাপ বাড়বে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজসম্পদ করপোরেশন—পেট্রোবাংলা ও গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে ত্রুটির কারণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। এতে শুক্রবার ভোর থেকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চট্টগ্রামবাসীকে। বাসার রান্না, যান চলাচল থেকে শুরু করে শিল্প প্রতিষ্ঠানে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (অপারশেন) গৌতম কুন্ডু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি মেরামতের পর শুক্রবার রাত সোয়া দশটার দিকে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। যেহেতু গ্যাসলাইন পাইপ একেবারেই খালি এবং অনেক দূর থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, সে কারণে নগরীর সব জায়গায় গ্যাস পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে শনিবার দুপুরের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
প্রায় তিন মাস ধরে চট্টগ্রামের অধিকাংশ বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকট চলছিল। হঠাৎ করেই পুরোপুরি গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাড়ে দুর্ভোগ। গ্যাস বন্ধ থাকায় রেস্তোরাঁয় খাবারের জন্য ভিড় করেন অনেকে। কেউ ইলেকট্রিক চুলা ও লাকড়ি জ্বালিয়েও রান্না করেন।
এদিকে গ্যাস না থাকায় শুক্রবার দিনভর ফিলিং স্টেশনগুলোর সামনে গ্যাসের জন্য অপেক্ষায় ছিল শত শত সিএনজি অটোরিকশা। গ্যাস না পেয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েন তারা যার প্রভাব পড়ে সড়কে। একই কারণে চট্টগ্রামের ছোট-বড় শত শত শিল্প প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়ে যায়।
কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড জানায়, মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনালের একটিতে অক্টোবর থেকে সংস্কার চলছে। একটি টার্মিনালে বৃহস্পতিবার রাতে ত্রুটি দেখা দিলে পুরো চট্টগ্রামে বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস সরবরাহ।
কেজিডিসিএলের জিএম (অপারেশন) গৌতম কুন্ডু বলেন, ‘ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে চট্টগ্রামে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় গ্যাস সরবরাহ। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগ পড়ে পুরো চট্টগ্রাম। তবে শুক্রবার রাতের মধ্যেই ত্রুটি সারানো সম্ভব হয়েছে।’
এরপর থেকে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। বর্তমানে লো প্রেসার পাইপ-লাইন দিয়ে ১৫ এমএমসিএফডি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে পাইপলাইনে চাপ বাড়লে ধীরে ধীরে ১০০ এমএমসিএফডি গ্যাস দেওয়া শুরু করবে।
পেট্রোবাংলা থেকে জানানো হয়, ১০০ এমএমসিএফডি স্থায়ী হলে পরবর্তী ১০০ এমএমসিএফডি সরবরাহ করবে। শনিবার দুপুর নাগাদ ৩০০ এমএমসিএফডি সরবরাহ করার ব্যাপারে আশাবাদী পেট্রোবাংলা। পরবর্তী ১২ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে।
২০১৮ সালের পর থেকে চট্টগ্রাম পুরোপুরি আমদানি করা এলএনজি গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন বলে জানায় কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ।