যেন থমকে আছে রাজপথ। অলিগলিরও একই অবস্থা। বাস, ট্রাক, টেম্পু থেকে শুরু করে প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এমনকি বাইকেল পর্যন্ত তীব্র যানজটে আটকা। একদিকে গরম, অন্যদিকে গাঁড়ির হর্ন, বাকবিতণ্ডা, শোরগোল মিলে জনদুর্ভোগ চরমে।
স্বাভাবিক সময়ে ১০ মিনিটের দূরত্ব পেরোতে রোববার (৪ এপ্রিল) সময় লাগছে এক ঘণ্টা পর্যন্ত। নগরের কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে প্রধান সড়ক ধরে যে বাস পতেঙ্গা যেতে সময় লাগত সর্বোচ্চ দেড় ঘণ্টা, এখন সেখানে আড়াই ঘণ্টায় পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। হাটহাজারী বাস স্টেশন থেকে নগরের নিউমার্কেট যে বাস ৪০-৪৫ মিনিটে আসত, সেটি এখন আসতে দেড় ঘণ্টার বেশি পেরিয়ে যাচ্ছে।
গণপরিবহন মালিক, শ্রমিক ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে লকডাউনের প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও সাধারণ যাত্রীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কেউ ছুটছেন গ্রামের বাড়িতে। আবার কেউ ফিরছেন শহরে। নগরের অনেকে এক সপ্তাহের জন্য কাঁচাবাজার, ভোগ্যপণ্য কেনাকাটা করতে বেরিয়েছেন। সপ্তাহের প্রথম খোলার দিন হওয়ায় পূর্বনির্ধারিত জরুরি কাজ সারতেও বেরিয়েছেন অনেকে। কর্মজীবীরা তো আছেনই।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিটি শপিং সেন্টারে ছিল উপচে পড়া ভিড়। মুদি দোকান থেকে শুরু করে কাঁচাবাজারেও ব্যস্ততম সময় পার করেছেন দোকানিরা। নিজেদের পরিবারের জন্য কেনাকাটার পাশাপাশি অনেকে আত্মীয়-স্বজনদের কাছেও রমজানের ছোলা-চিনি-চাল-ডাল পাঠাতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল জানান, লকডাউন শুরুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই যানজট তীব্রতর হয়েছে। দেড় ঘণ্টার দূরত্ব অতিক্রম করতে একেকটি বাসের আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। অনেক যাত্রী বাস থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন।
চট্টগ্রাম-নাজিরহাট-খাগড়াছড়ি বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাজাহান জানান, সকাল থেকেই চট্টগ্রাম শহরে অস্বাভাবিক যানজট। শহরমুখী, গ্রামমুখী দুই দিকেই যাত্রী বেশি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, লকডাউনের খবরে নগরের সড়কগুলোতে হঠাৎ করে গাড়ির অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ কাজ করলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ট্রাফিক বিভাগ।