চাল নিয়ে তৈরি হওয়া সংকট শিগগিরই কেটে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) বেলা ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘দ্বিতীয় চা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে এ ব্রিফিং করা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চালের কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। এই সংকট বেশিদিন থাকবে না। খুব শিগগিরই কেটে যাবে।
কয়েকদিন ধরে চালের বাজার লাগামহীন হয়ে ওঠেছে। ভরা মৌসুমেও চালের দাম এভাবে বাড়তে থাকায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ব্যবসার শর্ত ভেঙে কোন কোন বড় প্রতিষ্ঠান কোন ধরণের ব্যবসা করছে তাও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর চালের বাজার নিয়ে কারসাজি বন্ধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, খাদ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে। জরিমানাও করা হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু কারা চালের দাম নিয়ে কারসাজি করছে তা এখনো চিহ্নিত করতে পারছে না প্রশাসন। তবে বড় বড় শিল্প গ্রুপের কাছে চাল মজুদ পাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার চালের সংকট নিয়ে কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। বলেন, কিছু প্রতিষ্ঠান চাল নিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করছে। তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই সংকট শিগগিরই কাটবে।
টিপু মুনশি বলেন, ক্রেতারা চিকন চাল বেশি কিনছে। সেজন্য বড় গ্রপগুলো মোটা চাল চিকন করে বিক্রি করায় দাম বাড়ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৭ কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে। আমি কখনই বলিনি ১৭ কোটি মানুষের পয়সা বেশি হয়েছে। রিয়েলিটি (বাস্তবতা) হলো—দেশের ২০ ভাগ মানুষের লো ইনকাম (নিম্নআয়), সেটাকে মাথায় রাখতে হবে।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘১৭ কোটি থেকে তিন কোটি বাদ দিলে যে ১৪ কোটি থাকে, তাদের মধ্যে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ওয়েস্টার্ন ওয়ার্ল্ড (পশ্চিমা বিশ্ব) ইউরোপের মতো। দরিদ্র শ্রেণির তিন কোটি মানুষকে অ্যাডজাস্ট করা দরকার, সেটার চেষ্টাই করে যাচ্ছি। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে, সেটা আপনারাও জানেন।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেখা দরকার সাধারণ মানুষ সঠিক দামে পণ্য কিনতে পারছেন কি না। ক্রয়ক্ষমতাও দুটি দিক রয়েছে, একটি হলো—যারা উৎপাদনকারী ও যারা ভোক্তা। যদি এমন একটি পর্যায়ে নিয়ে যাই যে, উৎপাদনকারী আর ইন্টারেস্ট পাচ্ছে না। তাহলে কিন্তু প্রভাব পড়বে।’
টিপু মুনশি আরও বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে উৎপাদন খরচ, প্রফিট, মার্জিন কতটা থাকা উচিত। সামঞ্জস্যপূর্ণ দামের ক্ষেত্রে যেন কোনোভাবে বড় ধরনের পার্থক্য না থাকে। এটা দেখার জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে সাহায্য চাইবে, আমরা সাহায্য করবো।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নিম্নআয়ের মানুষের স্বার্থ দেখাটাই আমাদের লক্ষ্য। যাদের টাকা আছে, তিনি কী করবেন সেটা দেখার বিষয় না। কথা হলো—ন্যায্যমূল্যে যেসব পণ্য পাওয়া উচিত, সেটার দাম অবশ্যই আমরা দেখবো। খাদ্য মন্ত্রণালয় যখন আমাদের ডাকবে, তখন অবশ্যই যাবো। খাদ্যের বিষয়টি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কনসার্ন।’
এ সময় ভোজ্যতেলের দাম আর বাড়বে না বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। বলেন, পামওয়েলের দাম কমেছে, সয়াবিনের দাম আর বাড়বে না।