উচ্চ ফলনশীল জাতের কুল , চাষিরা সাবল্মবী ।
চুয়াডাংগা – থেকে ফিরে -গাজী আনোয়ার / অহিদুজ্জামান ( অহিদ) চুয়াডাংগা জেলার উপজেলা এলাকায় গড়ে উঠেছে উচ্চ ফলনশীল জাতের কুল বাগান। বাণিজ্যিক এই বাগানগুলো থোকা থোকা কাঁচা-পাকা কুলে ভরে গেছে। বাজারে বলসুন্দরী, কাশ্মিরি, ভারতসুন্দরী ও টক-
মিষ্টি কুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় কুল চাষ বাড়ছে, গড়ে উঠেছে ছোট-বড় বাগান। কুল চাষ অল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা বাগান গড়ে তুলছেন। এ মৌসুমে প্রায় ১৫ কোটি টাকার কুল বিক্রি হবে এই জেলায় । তবে আড়ৎদারদের কারণে চাষিরা বেশি লাভ করতে পারেন না। ৮ বছর আগে সর্বপ্রথম চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় ১০
বিঘা জমিতে গড়ে উঠে কুল বাগান। এসব কুল খেতে সুস্বাদু, মিষ্টি, রসালো ও আকারে অন্য জাতের কুলের চেয়ে বড়। এদিকে কুল চাষিরা বলছেন, আড়তদারদের অনিয়মের কারণে বাগান মালিকরা দাম কম পাচ্ছেন। আর সাধারণ ক্রেতাদের চড়া মূল্য দিয়ে কুল কিনতে হচ্ছে। বাগান মালিক ও ক্রেতাদের মধ্যে কেনা-বেচার পার্থক্য থাকে প্রতি কেজিতে ৩০-৪০টাকা। কুল উচ্চ ফলনশীল জাতের ফল হওয়ায় শীতকালে বাজারে চাহিদা থাকে ব্যাপক।
চুয়াডাঙ্গার – দামুড় হুদা , সরজগনজ বাজারে কুলের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, সাভার, গাজীপুর, খুলনা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই কুল যায়। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার লোকনাথপুর গ্রামে সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে উচ্চ ফলনশীল জাতের কাশ্মিরি কুল চাষ শুরু হয়। এরপর জেলায় ছড়িয়ে পড়ে বলসুন্দরী, কাশ্মিরি, ভারতসুন্দরী ও টক-মিষ্টি জাতের কুল চাষ। ৩৮০ হেক্টর জমিতে প্রায় ২৫৬ শ কুল বাগান রয়েছে।ঐ এলাকায় চারটি জাতের কুল চাষ করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় চাহিদা রয়েছে এ জাতের কুলের। কৃষক ও উদ্যোক্তারা জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে কুল বাজারে বিক্রি শুরু করেছেন। এ বছর ৩৮০ হেক্টর জমির কুল বাগান থেকে প্রায় ৩০৯০ টন ফল পাওয়া যাবে, যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৬৫ হেক্টর, আলমডাঙ্গায় ২০ হেক্টর, দামুড়হুদায় ১৭০ হেক্টর ও জীবননগরে ১১৮ হেক্টর জমিতে বলসুন্দরী, কাশ্মিরি, ভারতসুন্দরী ও টক-মিষ্টি জাতের কুল চাষ হচ্ছে।
প্রতি বিঘা কুল বাগানে বছরে খরচ হয় প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। খরচ বাদে বিঘায় প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়। শিক্ষিত বেকার যুবকরা কুল বাগান দেখে চাষে আগ্রাহ দেখাচ্ছেন। প্রতি কেজি কুল বিক্রি হচ্ছে ২৫-৪০ টাকা দরে। কুলের সাইজ বড় হওয়ায় এক কেজিতে ১৪-১৮টি হয়। চুয়াডাঙ্গা গাইদঘাট গ্রামের কুল বাগান মালিক সেলিম হোসেন বলেন, আমরা কুলের দাম পাই না। আড়তদাররা আমাদের কুল বিক্রি করে এক কেজিতে ৩০-৪০ টাকা বেশি লাভ করে। কিন্তু আমাদের দাম দেয়া হয় ৩০-৪০ টাকা। ফলে লাভ কম হয়, খরচ বাদে কোনো সময় লোকসানের মুখে পড়তে হয়। তিনি বলেন, ১০ বিঘা জমিতে বলসুন্দরী ও ৩ বিঘা জমিতে কাশ্মিরি জাতের কুল চাষ করেছি। বাগানে প্রতিদিন ১০ জন শ্রমিক কাজ করেন। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, জেলায় ৩৮০ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হচ্ছে। বলসুন্দরী, টক-মিষ্টিসহ বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হচ্ছে। ভারত থেকে বিভিন্ন জাতের কুল গাছ আসছে। কৃষকদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।