তাকে বলা হয় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা। সর্বোচ্চ গোল, সর্বোচ্চ ম্যাচ, সবচেয়ে বেশি অ্যাসিস্ট, এমনকি ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি জয় এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব তার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ছাড়া অন্য কোনো লিগে যে তিনি বেমানান! এ কারণেই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো চেয়েছিলেন, ম্যানইউ ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে, যাতে করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা অন্তত খেলতে পারেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না তিনি কোথাও যেতে। পারলেন না বললে ভুল হবে, কেউ নেয়নি তাকে। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়েই চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজাকে খেলতে হলো ইউরোপের দ্বিতীয় সারির টুর্নামেন্ট ইউরোপা লিগ।
সেখানে এসেও ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই ম্যানইউর হয়ে পুরো ৯০ মিনিট খেললেন। গোল তো করতেই পারেননি। উল্টো গোল হজম করে হারতে হলো তাকে এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। নিজেদের মাঠেই স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল সোসিয়েদাদের কাছে হেরেছে তারা ১-০ গোলের ব্যবধানে।
ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে ম্যানইউর জালে একমাত্র গোলটি করেন রিয়াল সোসিয়েদাদের ব্রাইজ মেন্ডেজ। পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলেই জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে রিয়াল সোসিয়েদাদ।
ম্যাচ শুরুর আগে রানি এলিজাবেথের স্মৃতির উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন দুই দলের ফুটবলাররা। ম্যাচ শুরুর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রানি এলিজাবেথের স্মৃতির উদ্দেশে উয়েফা বলে, ‘উয়েফা এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে গভীর শোভ প্রকাশ করছে। যিনি ছিলেন বিশ্বের অন্যতম একজন সম্মানিত ব্যক্তি।’
ব্রেন্টফোর্ডের কাছে ৪-০ গোলে হারের ম্যাচের পর রোনালদোকে আর সেরা একাদশে রাখেননি কোচ এরিক টেন হাগ। এর মধ্যে লিভারপুল, আর্সেনালের মত দলের বিপক্ষে জিতেছিল ম্যানইউ। ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট বলে এই ম্যাচের সেরা একাদশে রোনালদোকে জায়গা দেন টেন হাগ। কিন্তু এই ম্যাচেও জয় বঞ্চিত হতে হলো রেড ডেভিলদের।
রোনালদো অবশ্য একটি গোল করেছিলেন। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে হেড থেকে রিয়াল সোসিয়েদাদের জালে বল জড়ান তিনি। কিন্তু বেরসিক রেফারি অফসাইডের অজুহাতে গোলটি বাতিল করে দেন।
দুই দলই প্রথমার্ধে আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে খেলতে থাকে। কিন্তু কেউ কোনো গোল আদায় করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনকে মাঠে নামান কোচ টেন হাগ। কিন্তু লাভ কিছুই হলো না। উল্টো গোল হজম করতে হলো তাদেরকে।
ম্যাচের বয়স একঘণ্টা হওয়ার খানিক আগে বিতর্কিত পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। রিয়াল সোসিয়েদাদের ডেভিড সিলভার শট লিসান্দ্রো মার্টিনেজের পায়ে লেগে হাতে লেগেছিল বলটি। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক নেন ব্রাইজ মেন্ডেজ। ডেভিড ডি গিয়া তার শটটি ঠেকাতে ব্যর্থ হলেন। গোল হয়ে যায়।
টেন হাগ অন্তত সমতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে পরিবর্তন আনেন। জ্যাডন সানচোকে মাঠে নামান অ্যান্থোনির পরিবর্তে। আর্সেনালের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ী ম্যাচে গোল করেছিলেন সানচো। কিন্তু বাকি ২০ মিনিটেও কোনো লাভ হয়নি। ১-০ গোলে হার মেনেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে ম্যানইউকে।