ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে কক্সবাজার শহরের আতন্ক সৃষ্টিকারী, আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারীদের অন্যতম ছিলেন লুদুইয়া। কিন্তু তিনি এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে আছেন। অথচ, তাদের ভয়েই জুলাই থেকে গত ৫ আগস্ট,পর্যন্ত অজানা আর্তনাদে ছিল।
ছাত্র-জনতা,গণমাধ্যমকর্মী থেকে শুরু করে আন্দোলনে অংশ নেন সমর্থনকারীরা। দুয়েকটি ঘটনায় মামলা হলেও প্রকাশ্য অস্ত্রধারীরা ধরা পড়ছে না। এ বিষয়ে লেখক ও সাংবাদিক আব্দুল আলীম। বলেন, যারা অস্ত্র মহড়া দিয়েছে কিংবা শিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর জন্য অস্ত্রের ব্যবহার করেছে তাদের
আইনের আওতায় না আনা হলে এটি প্রশ্রয়ের শামিল হবে। ফলে ভবিষ্যতে সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টির পাশাপাশি কক্সবাজারে ফের ভয়াবহ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। যদিও এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ। জানাগেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া কক্সবাজার শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও আওয়ামী দোসর লুদুইয়া ধরা ছোঁয়ার বাহিরে আছেন।
জেল ফেরত এ আসামী বীরদর্পে অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নানান সমালোচনাও চালিয়ে যাচ্ছেন। আবুল মনছুর লুদু ওরফে লুদুইয়া কক্সবাজার শহরের
আব্দুর ছবুর সওদাগরের সন্তান। সূত্র জানিয়েছে,১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ নামধারী এই সন্ত্রাসী লুদুইয়ার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড
ডালপালা মেলে। সন্ত্রাসী ইকবাল হোসেন ছোটন,মুবিনুল হক ,জিয়াবুল সহ ১৫/২০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে সরকারী পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, জোরপূর্বক মানুষের জমি দখল, সরকারী খাস জমি দখল এবং চাঁদাবাজির মাধ্যমে কক্সবাজার শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে এ লুদুইয়া। এ বিষয়ে জানার জন্য আবুল মনছুর লুদু ওরফে লুদুইয়া’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক। তবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় প্রকাশ্যে তিনি কক্সবাজারে বিরোধীতা করেন ।তার বিরুদ্ধে ২০টির ও বেশি মামলা ও জিডি আছে যাহার অধিকাংশ কোর্টে বিচারাধীন আছে বলে জানা যায় । উক্ত আসামী লুদুইয়া ইতিপূর্বে নিজেই বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম সরাসরি পরিচালনা করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা মোকদ্দমা রজু হওয়ার পর এখন সে পর্দার আড়ালে থেকে অনুগত সন্ত্রাসি বাহিনী দিয়ে অপকর্ম চালাচ্ছে ,অভিযোগ করেন কক্সবাজার হোটেল মোটেল জুন এলাকার ব্যবসায়ীরা। তার বহিনীর সদস্য সাদ্দামের বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাদাবজি সহ ১০ টির অধিক মামলা আছে এবং আলাউদ্দিন এর বিরুদ্ধে ছিনতাই ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলা আছে বলে জানা যায়। সাদ্দাম, আলাউদ্দিন সহ প্রায় ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসির একটি বাহিনীর নেতৃত্ত্ব দেয় উক্ত আসামী লুদুইয়া। হোটেল মোটেল জোনে বিভিন্ন ইয়াবা ও নারী ব্যবসায়ীদের সুদে টাকার লেনদেন করে থাকেন। টাকা দিতে বিলম্ব হলে সন্ত্রাসীদের দিয়ে চাদাবাজি ছিনতাই, জমি দখল, ইয়াবা ব্যবসা, নারী ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূল কর্মকান্ড পরিচালনা করে লুদুইয়া প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করে। এইসব অপরাধমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে গত ২০/২৫ বছরে সে কোটি কোটি টাকা আয় করেছে এবং সেই অবৈধ টাকা উক্ত লুদুইয়া কক্সবাজারের ইসলামি ব্যাংক,স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক ও ডাচ বাংলা ব্যাংক সহ একাধিক ব্যাংকে তাহার স্ত্রী, সন্তান শশুর মোহাম্মদুল হক ও ভায়রা রিয়াদ এর নামে ৫০ কোটি টাকা ফিক্সড ডিপোজিট সহ অন্যন্যা উপায়ে সঞ্চয় রয়েছে বলে জানান। এছাড়া মেরিন ড্রাইভ রোডে ১০ বিঘা জমি এবং শশুর বাড়ি পোকখালী এলাকায় কোটি টাকার জমি ক্রয় করছে। বর্তমানে তিনি প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালিক বলে জানা যায়। তার আয় ব্যয়ের তদন্ত করলে সব কিছু প্রকাশ পাবে। এই অবৈধ টাকার খোঁজ পেয়ে কক্সবাজার দুদক অফিসে জনৈক দুদক কর্মকর্তা তদন্ত করেন। পরে বিভিন্ন তদবির করে ছাড়া পেয়েছেন বলে ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে জানা যায় । উক্ত আসামী লুদুইয়ার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় ২০টি মামলা ও জিডিগুলি রয়েছেন বলে জানা যায়। তিনি দেশ ও জাতির শত্রু ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে গিয়ে ছাত্রদের উপর হামলা করেছেন। তকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি করেন স্থানীয় ও ছাত্রজনতা।