স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, সরকার জঙ্গিবাদের বিষদাঁতগুলো ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে রোল মডেল তৈরি করেছে।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আজ বুধবার সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এক ভার্চুয়াল আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
নির্মূল কমিটির ৩০ বছর পূর্তিতে আন্দোলনের নেতাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নির্মূল কমিটির আন্দোলনের শুরু থেকেই চোখে আঙুল দিয়ে অনেক কিছু আমাদেরকে দেখিয়ে যাচ্ছে। আমরা জঙ্গিবাদের বিষদাঁতগুলো ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছি। কিন্তু সম্পূর্ণ নির্মূল করতে পারিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন জঙ্গিবাদ নির্মূলে তোমরা রোল মডেল তৈরি করেছ।’
তিনি বলেন, ‘জঙ্গিবাদ নির্মূলে আমরা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পেয়েছিলাম। শিক্ষক, ছাত্রসমাজ ও জনতা সবাই জঙ্গিবাদ নির্মূলে আমাদের সহযোগিতা করেছিল। গত ৩০ বছরে নির্মূল কমিটি যে কাজ করেছে জঙ্গিবাদ দমনে তা আমাদের পাথেয় হয়ে আছে।’ নির্মূল কমিটি মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। এতে সবাই সাড়া দিয়েছে। এমনকি মা তার ছেলেকে আমাদের কাছে ধরিয়ে দিয়েছেন, এরকম ৮টি ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গিরা নিহত হলে তাদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন লাশ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘কোনো ধর্মেই সন্ত্রাসবাদ ও মানুষ হত্যার অনুমতি দেয় না। বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সহযোগিতা আমাদেরকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে সফলতা এনে দিয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে নির্মূল কমিটি জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার ঘটনাগুলো জনগণের সামনে নিয়ে আসে, যা সরকারকে সহযোগিতা করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। আমরা জঙ্গিবাদ সম্পূর্ণ নির্মূল করতে না পারলেও তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিয়েছি।’
নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে আলোচ্য বিষয় ছিল- ‘জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধে সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সভাপতি নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ড. ফওজিয়া মোসলেম, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, গ্রাম থিয়েটারের সভাপতি নাট্যব্যক্তিত্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, প্রজন্ম ’৭১-র সভাপতি শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্যের মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমদ উল্লাহ, কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভিন, নিউ ইয়র্ক শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বীকৃতি বড়ুয়া, তুরস্কের সাধারণ সম্পাদক শাকিল রেজা ইফতি, নির্মূল কমিটির বহুভাষিক সাময়িকী ‘জাগরণ’-এর হিন্দি বিভাগের সম্পাদক ভারতের সমাজকর্মী তাপস দাস, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল এবং বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।