মুস্তাকিম নিবিড়ঃ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সওজ, বাংলাদেশ সরকারের অবকাঠামগত উন্নয়নে যে প্রতিষ্ঠানটি বরাবর প্রশংসিত হয়ে থাকে। সওজ কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রম ও মেধা মননের মাধ্যমে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ন সাফল্য এসেছে, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া রূপসা থেকে পাথুরিয়া দেশের আনাচে-কানাচে যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়েছে সহজ ও আরামদায়ক। সড়ক কর্তৃপক্ষের সফলতাকে ম্লান করতে উঠে পড়ে লেগেছে কিছু সংখ্যক দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ঠিকাদার সিন্ডিকেট। সরকার তথা জনগণের টাকা আত্মসাৎ করে কতিপয় কর্মকর্তারা গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য। সওজের বেশ কিছু সংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ অসাধু কর্মকর্তা দের নিয়ে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি পত্রিকা ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে কিছুটা সময়ের জন্য নড়ে চড়ে বসে সংশ্লিষ্ট জনেরা। কিন্তু অদৃশ্য হাতের ইশারায় হরহামেশাই পার পেয়ে যায় তারা। সেই অদৃশ্য শক্তি নানান ভাবে বল প্রয়োগ করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার উপর, আবার তারাই নিয়ন্ত্রণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন অথবা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি। এর কারণ কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাদের থেকে মোটা অংকের পয়সা বাগিয়ে নেয় তারা, এবং ঠিকাদার সিন্ডিকেটদের নিয়ন্ত্রণ করে দেশ বিদেশে বসে। ভিন্ন সূত্রে জানা যায় অসাধু কর্মকর্তা ও কতিপয় অসাধু ঠিকাদারদের আত্মসাৎ করা অর্থ সেই অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমেই বিদেশে পাচার হয়।
বিভিন্ন অনুসন্ধানে উঠে আসে সড়কের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রকৌশলীদের ভাগিনা ভাতিজারাও বড় মাপের ঠিকাদার, মামা চাচার জোর খাটিয়ে বাগিয়ে নিচ্ছে টেন্ডার। সেসব মামা চাচারা হঠাৎই হয়ে উঠেছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ, রাজধানীর উত্তরা গুলশান বারিধারা বসুন্ধরা ধানমন্ডি সহ বিভিন্ন অভিজাত এলাকায় তাদের রয়েছে একাধিক অট্টালিকা ফ্লাট ও দামি দামি দৈত্যাকার গাড়ি। দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকা ও টেলিভিশনে হর হামেশাই সওজের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশিত হয়, অভিযোগ ও জমা পড়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয় ও দুদকে। কিন্তু সেই অদৃশ্য শক্তি অভিযোগগুলো তদন্ত হতে দেয় না, তার বিনিময়ে সেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের কাছ থেকে গুনে নেয় কোটি কোটি টাকা। এবং তারা সাংবাদিকদের সংবাদ বন্ধ করার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে থাকে। আর এতে সবাই কমবেশি বিশ্বাস করে থাকে, কারণ লোক মুখে প্রচলিত আছে সাংবাদিকদের নাকি টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করা যায়? তাইতো কোন সাংবাদিক অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করা হয়েছে বললেই সবাই এক কথায় বিশ্বাস করে ফেলে। গণমাধ্যম কর্মীরা দায়িত্ব অনুযায়ী একের পর এক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশে ব্যস্ত থাকে আর সেই সুযোগেই পার পেয়ে যায় এই অসাধুচক্র। ঠিক তখনই সেই অদৃশ্য শক্তি বলে বেড় অমুক সাংবাদিক কে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছি, দুদকের অমুক অফিসার কে ম্যানেজ করেছি, যা সত্যের অপোলাপ মাত্র। কাজের চাপে যখন দুদক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা ও গণমাধ্যম ব্যস্ত সময় কাটায় ঠিক তখনই সুযোগ নেয় লুটেরাদের রক্ষক সেই অদৃশ্য শক্তি।
দূর্নীতি পরায়নদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত না হওয়ায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে চলছে বিচারহীনতার সংস্কৃতি। এতেই দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সওজের অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা। যার সুযোগ নিচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো। আর তাদের রক্ষা করে চলছে সেই অদৃশ্য শক্তি, তাদের বিভিন্ন সময় গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর করা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়ার ও রেকর্ড রয়েছে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরে বিচারহীনতার সংস্কৃতি কায়েম রাখতে এমন কোন কাজ নেই যে তারা করতে পারে না। লোক চক্ষুর আড়ালে থাকা সেই অদৃশ্য শক্তি সরকারের অভূতপূর্ব উন্নয়ন কে করছে প্রশ্নবিদ্ধ। পর্দার অন্তরালে থাকা সেই অদৃশ্য অশুভ শক্তির মুখোশ উন্মোচন করতে অবিরাম কাজ করে চলছে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি, যা আরো বিস্তারিত থাকবে পরবর্তী প্রতিবেদনে।