আশীষ বিশ্বাস, (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ সারাদেশে অধিকাংশ জেলার বিভিন্ন স্হানে হিন্দু মন্দির ও বাড়িঘরে ভাংচুর,অগ্নিসংযোগ,লুটপাট ও হিন্দু মা-বোন,ভাইদের নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে নীলফামারীর জলঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জলঢাকা সনাতনী সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের উদ্যোগে রবিবার (১১ আগস্ট) ১১টা সকালে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে প্রতিবাদ মিছিলটি বের হয়।মিছিলটি উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে জিরোপয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশে রুপ নেয়।এতে জলঢাকার সর্বস্তরের সকল শ্রেণীর সনাতনীরা সহযোগিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এই কর্মসূচীতে যোগ দেন।এসময় তারা হাতে বিভিন্ন অসাম্প্রদায়িক ও দাবি সম্বলিত স্লোগান লিখা প্ল্যা-কার্ড প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভ মিছিলে সারা দেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণের নিন্দা জানান অংশগ্রহণকারী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলায় বারবার কেন হিন্দুরাই রাজনীতির শিকার হবে? – এমন প্রশ্নও উত্থাপন করেন তারা।‘স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও কেন বারবার হিন্দুরা হামলা, আক্রমণের শিকার হবে?’ তাদের দাবি, সংখ্যালঘু হিসেবে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের পূর্ণ মর্যাদা নিয়েই থাকতেন চান তারা।
সনাতনী সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দের প্রধান সমন্বয়ক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিতোষ রায় জানান,সারাদেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় তারা পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত পার করছেন। আতঙ্ক নিরসনে কার কাছে সাহায্যে চাইবেন বুঝতে পারছেন না।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বিক্ষোভ সমাবেশে সমন্বয় করেন,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তপন রায়,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমন রায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রাবণ রায়,বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কমল রায়,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দেবাশীষ রায়,জিতেন্দ্র নাথ রায়সহ অনেকে।
তারা বলেন, চারদিকে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যা এই সময়ে কাম্য হতে পারে না।বৈষম্য নিরসনের কথা বলা হলেও এই হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পক্ষই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।এসময় তারা সব হামলা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন।এসময় সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা,অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন,সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা,হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত,পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত,দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন যথাযথ বাস্তবায়ন,প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ করা,সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন,শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন ছুটির দাবী করেন।