1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২০ অপরাহ্ন

জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা’র কেন্দ্রীয় সভাপতি সাংবাদিক নেতা মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের ৭৭ তম জন্ম দিবস

মোঃ রাব্বি মোল্লা
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

২৭শে সেপ্টেম্বর জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সভাপতি বিশিষ্ট-প্রবীণ সাংবাদিক আলতাফ হোসেনের ৭৭ তম জন্ম দিবস।

দেশের সাংবাদিকতা জগতে মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একটি পরিচিত নাম। তিনি ১৯৭০ সালে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে বিগত ৫৪ বছরে দৈনিক আজাদ, দৈনিক গণকণ্ঠ, দৈনিক জনতা, দৈনিক সমাজ, দৈনিক ইনকিলাব সহ বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বেতারের বাংলা সংবাদ বিভাগে কাজ করেন। তাছাড়া বেতারে বিভিন্ন কথিকা ও সংবাদ পর্যালোচনা লিখেছেন দীর্ঘদিন। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য ছিলেন। তিনি নজরুল একাডেমীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। তার উদ্যোগেই ১৯৮২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি দেশের সর্বস্তরের সাংবাদিকদের একক সংগঠন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বিভিন্ন সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনে তার বহু প্রবন্ধ, গল্প, কবিতা ও নিবন্ধন প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দেশের অন্যতম আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৩ সাল থেকে তিনি আন্তর্জাতিক বিষয়ে নিয়মিত পর্যালোচনামূলক লেখা লিখে আসছেন।

বিশিষ্ট সমাজসেবী মরহুম আবদুল কাদের ও মা আম্বিয়া খাতুনের জ্যেষ্ঠপুত্র মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের জন্ম ১৩৫৪ সালের ১১ই আশ্বিন অর্থাৎ ১৯৪৭ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর বরিশাল জেলা বাকেরগঞ্জ উপজেলার আওতাধীন ১৪নং নিয়ামতি ইউনিয়ন ৪নং ওয়ার্ডের ঢালমারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম হলেও বাবার কর্মস্থল ঢাকায় বসবাস শুরু করেন শিশুকালেই। সেই সূত্রে কমলাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, কায়েদে আজম কলেজ (বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তার শিক্ষা জীবন অতিবাহিত হয়।

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন ১৯৭০ সালে সাংবাদিকতা পেশায় যোগদান করেন। সেই বছর তিনি সদ্য প্রকাশিত দৈনিক সংগ্রামে যোগ দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি দৈনিক গণকণ্ঠে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে দৈনিক ইনকিলাব প্রকাশিত হলে তিনি সহকারী বার্তা সম্পাদক পদে যোগ দেন। বিশিষ্ট বেতার ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ আলতাফ হোসেন ১৯৭০ সালের ১৬ই অক্টোবর তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে যোগ দেন। তিনি ঢাকা বেতারে সব ধরণের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন কথিকা ও সংবাদ পর্যালোচনা লিখে তিনি সুনাম অর্জন করেন। ঢাকা বেতারের বার্তা বিভাগেও তিনি দীর্ঘদিন কাজ করেন। তিনি জাতীয় ভিত্তিক বার্তা প্রতিষ্ঠান এফএনএস (ফেয়ার নিউজ সার্ভিস) এর প্রধান সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার সম্পাদনায় বিগত ৪২ বছর ধরে প্রকাশিত হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ জাতীয় সংবাদপত্র সমতল।

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন ছাত্র জীবন থেকেই বিভিন্ন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কবি জসীম উদ্দীনের সাহিত্য সাধনা সংঘ, অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমদের পূর্ণিমা বাসর, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীনের সাওগাত সাহিত্য পরিষদ তার অন্যতম। মুহম্মদ আলতাফ হোসেন আলাপন সাহিত্য গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, বাংলাদেশ যুব আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব, জাতীয় কৃষ্টি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলা সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ লেখক সমিতির অন্যতম উপদেষ্টা। তার সম্পাদনায় ‘আলাপন’ নামের সাহিত্য সাময়িকী দীর্ঘদিন প্রকাশিত হয়। দেশের বহু বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাহিতিকের সংস্পর্শে তিনি এসেছেন। তাদের মধ্যে প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ, ডঃ কাজী দীন মুহম্মদ, কবি তালিম হোসেন, মোহাম্মদ মোদাব্বের, কবি জসিম উদ্দীন, আকবর হোসেন, মুজিবুর রহমান খাঁ, আখতার-উল আলম, ডঃ আশরাফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমদ, এ.কে.এম মহিউদ্দিন, অধ্যাপক আবদুল গফুর অন্যতম।

মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের ছাত্র জীবন থেকেই লেখালেখির অভ্যাস। তার প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্প বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে এক সময় তিনি আজাদ, পূর্বদেশ, বাংলার বাণী, দৈনিক জনপদ ও ঢাকা ডাইজেস্ট পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন।

বাংলাদেশের সাংবাদিকতা জড়তে মুহম্মদ আলতাফ হোসেন একটি পরিচিতি নাম। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একজন সংগ্রামী সদস্য ছিলেন। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)’র নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হন। কিন্তু দেশের গ্রামীণ সাংবাদিকদের প্রতি রাজধানীতে কর্মরত সাংবাদিকদের অবহেলার প্রতিবাদে তিনি ১৯৮২ সালে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা গঠন করেন।

১৯৮২ সালের ১২ই ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত জাতীয় সাংবাদিক সংস্থাকে তিনি নেপথ্যে থেকে গড়ে তোলেন। কারণ তিনি তখন বিএফইউজে ও ডিইউজে’র সক্রিয় সদস্য। ১৯৮৫ সালে তিনি সংস্থার মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে ১৯৮৯ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। তার বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে দেশের সকল জেলা ও অধিকাংশ উপজেলা/থানায় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা পরিচিত লাভ করেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সর্বস্তরের সাংবাদিকদের একক সংগঠন হিসেবে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা (জেএসএস) বিকাশ লাভ করেছে। আর মুহম্মদ আলতাফ হোসেন দেশের নবীন ও অবহেলিত গ্রামীণ সাংবাদিক সমাজের পরিচয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার বিকাশ ও উন্নয়নে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুহম্মদ আলতাফ হোসেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের আয়োজিত সাংবাদিক প্রশিক্ষণ কর্মশিবিরে প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। মুহম্মদ আলতাফ হোসেন কলেজ অব জার্নালিজম-এর প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল ছিলেন। বেসরকারি উদ্যোগে সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণের লক্ষ্যে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সাংবাদিক সৈয়দ তাজ-উস-শফী। কিন্তু প্রায় ৫ বছর নানা কারণে ২০০১ সালের পর কলেজটি আর চালানো যায়নি। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ মিডিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

দেশের সাংবাদিক সমাজ বিশেষ করে গ্রামীণ সাংবাদিক সমাজের কল্যাণে মুহম্মদ আলতাফ হোসেন আজীবন নিবেদিক প্রাণ। দেশের সংবাদপত্র জগতকে একটি শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা এবং সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মুহম্মদ আলতাফ হোসেনের প্রয়াস নিরন্তর। দেশের সংবাদপত্র শিল্পকে একটি সুষ্ঠু ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করা এবং সর্বস্তরের সাংবাদিক সমাজের আর্থিক নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তিনি প্রণয়ন করেছেন ২১ দফা কর্মসূচি। এই সকল কর্মসূচি বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্রামীণ ও শহরে সব ধরনের সাংবাদিকদের রুটি রুজি ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত হবে। তার নেতৃত্বে জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা এই ২১ (একুশ) দফা বাস্তবায়নে সারাদেশে কাজ করে যাচ্ছে।

মুহম্মদ আলতাফ হোসেন ও স্ত্রী আছিয়া হোসেন অত্যন্ত সফল দম্পতি। তাদের দুইটি পুত্র সন্ত্বান।জ্যেষ্ঠ পুত্র ডাঃ মুহম্মদ মুনীর হোসেন ইউএনএফপিএ’র বাংলাদেশের কাট্রি প্রোগ্রাম অফিসার , কনিষ্ঠ পুত্র মুহম্মদ মনজুর হোসেন সিটি ব্যাংকের অফিসার। দুই পুত্র, পুত্রবধুদ্বয় এবং উভয় পক্ষে তিন নাতী-নাতনীসহ এই সাংবাদিক নেতা দুনিয়াতেই জান্নাতী সুখে বসবাস করছেন। তিনি যেন পরকালেও জান্নাত লাভে ধন্য হন সেই দোয়া তার কাম্য সর্ব মহলের কাছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি