ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিস্ময় জাগানো হাঙ্গেরি এবারও উপহার দিল আত্মবিশ্বাসী ফুটবল। ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়ার ধাক্কা দ্রুত কাটিয়ে উঠলেও পরে আর তেমন আলো ছড়াতে পারল না জার্মানি। টানা তৃতীয় ড্রয়ের হতাশায় মাঠ ছাড়ল হান্স ফ্লিকের দল। বুদাপেস্টের পুসকাস অ্যারেনায় শনিবার রাতে ‘এ’ লিগের ৩ নম্বর গ্রুপের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে।
ম্যাচে বল দখলে অনেক এগিয়ে থাকলেও আক্রমণের বিচারে দ্বিতীয় সেরা দল হয়েই ছিল জার্মানি। গোলের উদ্দেশ্যে পাঁচটি শট নিয়ে গোলের ওই একটিই লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। সেখানে হাঙ্গেরি শট নেয় ১১টি, যার সাতটি ছিল লক্ষ্যে। সাত দিন আগে ইংল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারানো হাঙ্গেরি এদিন ষষ্ঠ মিনিটেই দারুণ এক পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায়। ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রসে হেড করেন এডাম সলোই, গোলরক্ষক কোনোমতে সেটা ঠেকিয়ে দিলেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। আলগা বল ছয় গজ বক্সের বাইরে পেয়ে জোরাল শটে জালে পাঠান নওজ।
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল করলেন এই ডিফেন্ডার। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ অবশ্য স্থায়ী হয়নি গত বছরের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে চমক জাগানো পারফরম্যান্স করা দলটির। তিন মিনিট পরই সমতা টানেন হফমান।
মাঝমাঠ থেকে হফমানের উদ্দেশে নিকো শ্লটারবেকের উঁচু করে বাড়ানো থ্রু বল ঠেকাতে এগিয়ে যান গোলরক্ষক; কিন্তু সময়মতো পৌঁছাতে পারেননি তিনি। বলে দারুণ এক টোকায় তাকে ফাঁকি দিয়ে অনায়াসে বাকি কাজ সারেন বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখের মিডফিল্ডার। গত মঙ্গলবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ ড্র ম্যাচেও গোল করেছিলেন তিনি।
সাহসী ফুটবলে বারবার জার্মানির রক্ষণে ভীতি ছড়াতে থাকে হাঙ্গেরি। আক্রমণ পাল্টাআক্রমণে জমে ওঠে লড়াই।
৪০তম মিনিটে জার্মানির ডাভিড গাউমের কোনাকুনি শট দূরের পোস্ট ঘেঁষে বাইরে যায়। চার মিনিট পর প্রতি-আক্রমণে দ্বিতীয় গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল হাঙ্গেরি; তবে আতিলা ফিওলার প্রচেষ্টা দারুণ নৈপুণ্যে ঠেকিয়ে দেন মানুয়েল নয়ার।
বিরতির পর ম্যাচের গতি কমে যায়। বল দখলে জার্মানি আধিপত্য করলেও তারাও পারছিল না কোনো সুযোগ তৈরি করতে। ৬৪তম মিনিটে হঠাৎ করেই হাঙ্গেরির রক্ষণ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। ডান দিকের বিস্তর ফাঁকা জায়গা পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকে কী বুঝে শট না নিয়ে বাঁ পাশে বল বাড়ান টিমো ভেরনার, তাতে ভেস্তে যায় সুবর্ণ সুযোগ।
৮১তম মিনিটে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে জোরাল শটে ভীতি ছড়ান ডানিয়েল গাজডাগ। লাফিয়ে এক হাত দিয়ে কোনোমতে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠান নয়ার। পরের মিনিটে ব্যবধান গড়ে দেওয়ার ভালো সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি মার্টিন এডামও। তার হেড নয়ারের হাতে জমে গেলে অমীমাংসিতই রয়ে যায় লড়াই।
গত বছর দায়িত্ব নেওয়া ফ্লিকের কোচিংয়ে শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল জার্মানির। তার হাত ধরে প্রথম আট ম্যাচের সবকটিতে জিতেছিল তারা। কিন্তু এরপর টানা চার ম্যাচে ড্র করল দলটি।