করোনা মহামারির মধ্যে বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। তবে স্থির মূল্যে এই জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ ১১ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। অন্যদিকে মাথাপিছু আয় ২০২৪ ডলার থেকে বেড়ে ২২২৭ ডলার দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক এ তথ্য প্রকাশ করেছে। বিবিএস ২০২০-২১ অর্থবছরের নয় মাসের (২০২০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২১ সালের ৩০ মার্চ) হিসাব কষে এই তথ্য প্রকাশ করে।
গত বছরের তুলনায় তার আগের অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) জিডিপি প্রবৃদ্ধি আরও কমেছে। সেই অর্থবছরে প্রকৃত জিডিপি অর্জন ছিল ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। স্থির মূল্যে চূড়ান্ত হিসাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপির আকার ছিল ২৭ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। প্রাথমিক হিসাবে যা ছিল ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৮ কোটি টাকা। যদিও সেই বছর জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
বিবিএস প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কৃষিখাতে ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে সেবাখাতেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৮৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ১২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে ১ জুলাই শুরু হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে অবশ্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে ৭ দশমিক ২ শতাংশ করেছে সরকার। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়, যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ছিল ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
প্রতি বছর এপ্রিল-মে মাসের দিকে ওই অর্থবছরের নয় মাসের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে জিডিপির একটি প্রাথমিক হিসাব তৈরি করে থাকে বিবিএস। পরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের দিকে পুরো অর্থবছরের তথ্য-উপাত্ত হাতে পেয়ে জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব করা হয়। তবে মহামারির কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রাথমিক হিসাব দেরিতে প্রকাশ করলো পরিসংখ্যান ব্যুরো।