সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হলেও জিম্মিদের হত্যার শঙ্কায় পরে পিছিয়ে যায় ওই জাহাজটি।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরের দিকে এ তথ্য জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জিম্মি নাবিক।
তিনি বলেন, বুধবার দিনগত রাতে নেভির একটি জাহাজ আমাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু জলদস্যুরা আমাদের হস্তান্তর করেনি। উদ্ধারে আসা জাহাজটি বাইরে থেকে ফায়ার করেছে। তখন জলদস্যুরা বলছে, বাংলাদেশি নাবিকরা জিম্মি আছে। যদি জাহাজ থেকে হামলা হয়, তাহলে নাবিকদের মেরে ফেলবে।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর উদ্ধারে আসা জাহাজ ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে থেকে আমাদের অনুসরণ করছে। আমাদের ক্যাপ্টেনকে তারা জানিয়েছে, তারা আমাদের ফলো করছে। জাহাজটি ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে দূরে থাকছে।
তবে উদ্ধারে আসা জাহাজটি সোমালিয়ার কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি ওই জিম্মি নাবিক। তবে ধারণা করা হচ্ছে, জাহাজটি আরব আমিরাত বা অন্যকোনো আরব দেশের হবে।
এর আগে, ভারত মহাসাগরে এমভি আবদুল্লাহ নামের বাংলাদেশি জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে সোমালিয়ার জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর জাহাজে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে জিম্মি করে।
জানা গেছে, নাবিকদের ছাড়তে ‘৫০ লাখ’ মার্কিন ডলার চেয়েছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। মুক্তিপণ না পেলে বাংলাদেশি নাবিকদের মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
জাহাজটি প্রধান কর্মকর্তা (চিফ অফিসার) মো. আতিক উল্লাহ খান তার স্ত্রীকে পাঠানো সর্বশেষ এক অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না দিলে তারা একে একে আমাদের সবাইকে মেরে ফেলবে। তাদের যত তাড়াতাড়ি টাকা দেবে, তত তাড়াতাড়ি ছাড়বে বলেছে। এই বার্তাটা সবদিকে পৌঁছে দিও।
দেশের শীর্ষ শিল্প গ্রুপ কেএসআরএমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্ত ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। প্রথমে জাহাজটির নাম ছিল ‘গোল্ডেন হক’। পরে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর এর নাম হয় ‘এমভি আবদুল্লাহ’। এটি একটি বাল্ক কেরিয়ার।