ভোলা প্রতিনিধি :
ভোলার চরফ্যাশনের শশিভূষণ থানা এলাকায় শরীর থেকে জ্বীন তাড়ানোর নামে ওমর ফারুক নামে ৭ বছরের এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে কবিরাজ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত কবিরাজ তাসলিমা বেগমকে (৩২) গ্রেফতার করেছে শশিভূষণ থানা পুলিশ।মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শশিভূষণ থানা এলাকার রসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।শশিভূষণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।নিহত ওমর ফারুক দক্ষিণ আইচা থানা এলাকার চর মানিকা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. কামাল খাঁর ছেলে। গ্রেফতার হওয়া কবিরাজ তাসলিমা বেগম রাসুলপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল জব্বার হাওলাদারের স্ত্রী।
নিহত ওমর ফারুকের বাবা কামাল খাঁ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি কে জানান, ওমর ফারুক বেশ কয়েকদিন ধরে শারীরিক অসুস্থ ছিল। সে মুখে আবোলতাবোল বলত। স্থানীয় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেও ফারুকের কোনো উন্নতি হয়নি। তাই সকালে দক্ষিণ আইচা থানা এলাকার কবিরাজ তাসলিমা বেগমের কাছে ওমর ফারুককে নিয়ে যাওয়া হয়। ওমর ফারুককে দেখে কবিরাজ জানায়, তাঁর সঙ্গে জ্বীন রয়েছে। সেজন্য সে আবোলতাবোল বলছে। তাঁর শরীর থেকে জ্বীন তাড়াতে হবে।এরপর ঘরের অন্ধকার একটি রুমের মধ্যে ওমর ফারুককে একা নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ওমর ফারুকের বাবা, মা ও নানা কবিরাজের ঘরের বাহিরে বসা ছিল।ঘন্টাব্যাপী কবিরাজ তাসলিমা বেগম অন্ধকার একটি রুমের মধ্যে ওমর ফারুককে আটকে জ্বীন তাড়ানোর নামে বেধড়ক মারধর করে। কবিরাজের নির্যাতনে শিশুটি চিৎকার শুরু করে। একপর্যায়ে কবিরাজ শিশুটির বুকের উপর পা ও গলায় হাত দিয়ে চেপে ধরে। এতে ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।
শশিভূষণ থানার ওসি এনামুল হক জানান, শিশুটির শরীর থেকে জ্বীন তাড়ানোর নামে কবিরাজ শিশুটিকে নির্মম নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। শিশুটির শরীরে নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। পুরো শরীরে রক্তের জমাট লাল হয়ে আছে। কবিরাজের নির্যাতনেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় কবিরাজ তাসলিমা বেগমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।