খেলার মাঠে জয়ের মনোভাব নিয়ে খেলতে খেলোয়াড়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ এ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা ও আর্থিক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আর সব সময় ট্রেনিংটা দরকার। প্রশিক্ষণ, এটাকে কোনোমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি ট্রেনিং হবে তত বেশি খেলাধুলা উৎকর্ষতা পাবে।
খেলাধুলা না করে বাচ্চারা ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকাল বাচ্চারা সবাই, বিশেষ করে ঢাকার বাচ্চারা তো ফ্ল্যাটে থেকে ওগুলো ওই যে ফার্মের মুরগির মতও হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলায় যায় না। এটা হলো বাস্তব কথা।
তিনি বলেন, এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, সারাক্ষণ হয় মোবাইল অথবা ট্যাব নিয়ে বসে থাকে। ফিজিক্যালি যে চর্চাটা হওয়া দরকার সেটা হচ্ছে না। এটা কিন্তু খুবই দরকার।
সন্তানকে খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করতে অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকটা অভিভাবককে আমি অনুরোধ করবো অন্তত কিছুক্ষণ হলেও আপনারা আপনাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে একটু নজর দেন। তাদেরকে খেলায় (মাঠে) যান। ’
লেখাপড়ার সঙ্গে খেলাধুলার করার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, লেখাপড়া করবে স্কুল আছে ঠিক আছে তার সাথে সাথে খেলাধুলা করতে হবে। স্কুলগুলোতেও খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকা উচিত।
নিজের পরিবারের সদস্যদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহের কথা কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের পরিবারে কিন্তু খেলাধুলা আছে, জয়ের মেয়ে সে কিন্তু ছোটবেলা থেকে খুব ফুটবল খেলতো। রেহানার ছেলে ববি নিজেও খেলে। পরিবারের সবার একটু ফুটবল খেলার দিকে ঝোঁক বেশি, বলতে পারি না দাদার থেকে আসছে বোধ হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিভিন্ন উন্নয়নের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছর ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সফলতা উত্তরোত্তর বেড়েছে। বিভিন্ন ক্রীড়া ডিসিপ্লিনে বাংলাদেশ নানা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মোট ৪৮৫টি স্বর্ণ, ৪৯৯টি রৌপ্য, ৫৯৫টি তাম্র পদক অর্জন করেছে, এবং ১১৪ বার চ্যাম্পিয়ন, ২৬ বার রানার্সআপ ও ২২ বার তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
বক্তব্যের আগে প্রধানমন্ত্রী সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ছিনিয়ে আনা বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের মেয়েদের প্রত্যেকের হাতে ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেন। এছাড়া টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্যদের প্রত্যেককে ২ লাখ টাকার চেক দেন। এরপর পুরো দল মিলে প্রধানমন্ত্রীর হাতে সাফের শিরোপা তুলে দেয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এবং বাফুফে (বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।
১৯ বছর পর মেয়েদের হাত ধরে ফুটবলে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব আসে বাংলাদেশে। ছাদখোলা বাসে তাদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেয় দেশের সাধারণ মানুষ। রাষ্ট্রীয় কাজে তখন দেশের বাইরে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাই মেয়েদের সংবর্ধনা দিতে পারেননি।
১৯ সেপ্টেম্বর ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শিরোপা ঘরে ছিনিয়ে আনে বাংলাদেশের মেয়েরা।