যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ জয় কয়েক বছর আগে মা ও নানার দল আওয়ামী লীগের সদস্যপদ নিলেও রাজনীতিতে ততটা সক্রিয় নন।
তবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই কাজে তার সক্রিয়তা রাজনীতির চেয়ে অনেক বেশি দৃশ্যমান।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর মেয়ে শেখ হাসিনা যেভাবে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন, সেভাবে জয়কেও ভবিষ্যতে নেতৃত্বে দেখতে চায় দলটির অগুনতি নেতা-কর্মী।
বিশ্বের নানা দেশে বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে বংশ পরম্পরায় রাজনীতিতে আসার উদাহরণ ভুরিভুরি।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বিভক্ত আওয়ামী লীগকে জোড়া লাগাতে দলীয় সভানেত্রীর পদে এসেছিলেন শেখ হাসিনা।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে পঁচাত্তর ট্রাজেডির পর সন্তানদের নিয়ে নিজের এবং বোন শেখ রেহানার বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
ফখরুল ইমাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন, “জয় বাংলা দুটি শব্দ। প্রথম শব্দটি নিয়ে আপনি কী ভাবছেন?”
মায়ের এক নির্বাচনী জনসভায় স্ত্রীকে নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় (ফাইল ছবি)মায়ের এক নির্বাচনী জনসভায় স্ত্রীকে নিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয় (ফাইল ছবি)
উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ছেলে-মেয়েদের আমরা পড়াশুনা শিখিয়েছি। তাদেরকে একটা কথা বলেছি, কোনো সম্পদ দিতে পারব না। একটাই সম্পদ, যত পার শিক্ষা গ্রহণ কর। শিক্ষা হচ্ছে সব থেকে বড় সম্পদ। ওই শিক্ষাটাই তার জীবন জীবিকার সব সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।
“আমরা দুই বোন আমাদের ছেলে-মেয়েদের সেইভাবে তৈরি করেছি,” জানিয়ে তিনি বলেন, “তাদের জীবনের ভবিষ্যৎ তারা নিজেরাই ঠিক করবে। এই দায়িত্বটাই তাদের ওপর ছেড়ে দিয়েছি।”
শেখ হাসিনার ছেলে জয় বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে মাকে সহায়তা করছেন। মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল অটিজম নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর কেড়েছেন।
শেখ রেহানার দুই ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিক গত বছরই যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
জয়ের বর্তমান ভূমিকা তুলে ধরে মা শেখ হাসিনা বলেন, “সে কিন্তু আমাদের সহযোগিতা করছে। আজকে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ছি। এই ডিজিটাল শব্দটা থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যতটুকু অর্জন তার পরামর্শ মতোই করা হয়েছে।
“কাজেই সে কিন্তু জনগণের সেবা করছে। কিন্তু কোনো কিছু পাওয়ার আশা বা কোনো কিছু নিতে আসেনি। যতটুকু পারছে দিচ্ছে।”
ফখরুল ইমাম ‘পুরুষের ক্ষমতায়ন’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাবনা জানতেও প্রশ্ন করেন, যাতে তিনি বলেন, বিয়ের পর টিভি চ্যানেল বদলানোর ক্ষমতা হারাতে হয় পুরুষদের।
বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় থাকা শেখ হাসিনা এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে হাসতে হাসতে বলেন, “উনি যে বউকে এত ভয় পান, তা প্রশ্ন না করলে জানতে পারতাম না। উনি এ কারণে ঘরে পুলিশের পাহারার কথা বলেননি এ জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
টিভি চ্যানেল বদলোনোর জন্য স্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “ঘরে চ্যানেল বদলোনোর বিষয়টি সমঝোতা করে নেওয়া যায়। কে কখন, কতটুকু দেখবে। যিনি আপনার কর্ত্রী তার সঙ্গে বসে সমঝোতা করে নেন, তাহলে চ্যানেল বদলানো নিয়ে সংঘাত হয় না।