মুস্তাকিম নিবিড়ঃ ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়রদের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে, দরজায় কড়া নাড়ছে আসন্ন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। সিটি নির্বাচন নিয়ে এখনই নিজ নিজ পরিকল্পনা আটছেন বর্তমান দুই মেয়র এবং তাদের কাউন্সিলররা, বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। জাতীয় নির্বাচনের পর জনগণ ব্যাপক উৎসাহের সাথে অপেক্ষা করে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ায় ঢাকার পাড়া মহল্লায় বিভিন্ন প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণায় জমে ওঠে সিটি নির্বাচন। নির্বাচিত কাউন্সিলররাই মূলত একটি ওয়ার্ডের কিছু নির্বাহী ক্ষমতা পেয়ে থাকেন, আর এ ক্ষমতার দ্বন্দ্বেই সিটি নির্বাচন ঘিরে তৈরি হয় এক ভিন্ন ধরনের আবহ। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় আসন্ন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড। শীর্ষ সন্ত্রাসীরা ইতোমধ্যে নিজেদের জাহির করতে মহানগরের অলিগলিতে কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণকারীদের একত্রিত করছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিদেশে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার চিহ্নিত অপরাধীদের নিয়ে অরাজকতা তৈরি করার নীলনকশা কষছে। কারাগারে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীরাও সহযোগীদের নানা বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছে। এদের অনেকে রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে। এসব তথ্য পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দীর্ঘদিন আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসীসহ বিভিন্ন অপরাধী ভারত, মালয়েশিয়া, দুবাই, ইতালি, কানাডা, লন্ডন, ফ্রান্স, আমেরিকাসহ নানা দেশে আত্মগোপন করে আছে। তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। এসব নিয়ে দৈনিক জাতীয় অর্থনীতির অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। চলছে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের নামে নেতাকর্মীদের পালটাপালটি রাজনৈতিক কর্মসূচি। রাজধানী ঢাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে তারা বেশ তৎপর। রাজধানীর দুই মেয়রের আসন দখলে নিতে মুখিয়ে আছে কয়েকজন সংসদ সদস্য। তারা নিজ নিজ কর্মীদের কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করতে নানান কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। এমনকি তাদের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রেখেছেন।
এক্ষেত্রে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করার সম্ভাবনা দেখছে অনেকেই। বিভিন্ন সূত্র জানায যায় রাজধানীর চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা যেকোনো সময় সক্রিয় হতে পারে রাজনৈতিক মিছিল-মিটিংয়ে, তাদের কেউ কেউ সামাজিক কর্মকাণ্ডের নামে গর্ত থেকে বেরিয়ে আসছে। তাদের জন্য স্থানীয় নেতাদের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টাও করছে। চিহ্নিত এসব সন্ত্রাসীর গতিবিধি নজরদারি করছেন গোয়েন্দারা। ঢাকার আসন্ন দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্র আমদানি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন। রাজধানীর প্রত্যন্ত এলাকায় চলছে কঠোর নজরদারি । অন্যদিকে পালিয়ে থাকা সন্ত্রাসীরা অনেকেই প্রকাশ্যে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা নির্বাচনের আগে পরিকল্পনামাফিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করবে বলে মনে করছে বিশ্লেষকগণ।