সময়টা ২০০১ সালের অক্টোবর-নভেম্বর। তখনো ফেসবুক, ইউটিউব কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো তখনো দোরগোড়ায় পৌঁছেনি। ওই সময় সুমন, পিন্টু, অভিদের পাশাপাশি হঠাৎই আবির্ভাব ঘটে শাহীন ওরফে সিডি শাহীনের। বেশ কয়েকজন কলেজ, ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণীদের নিয়ে তৈরি ব্লু-ফিল্মের সিডি বেপরোয়া বাজারজাত হতে থাকে। সিডির গায়ে লিখে দেওয়া হতো ‘বাংলাদেশি পর্নো। ফলে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে এমনকি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ধুমছে কেনাবেচা চলতে থাকে সিডিগুলো। এ ব্যাপারে গোয়েন্দা অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর কাহিনী।’জানা যায়, উত্তরা ৫ নম্বর সেক্টরের ১/এ রোডের ২৩ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা মোহাম্মদ আব্দুর রশিদের ছেলে নূরউদ্দিন মাহমুদ শাহীনই হচ্ছে এসব বাংলা পর্নো ছবি তৈরির মূল হোতা। তিনি প্রেমের ছলনায় বিভিন্ন তরুণীকে তার দামি গাড়িতে তুলে সরাসরি নিজের বাসায় নিয়ে যেতেন এবং অন্তরঙ্গভাবে মেলামেশার দৃশ্যাবলী একাধিক গোপন ক্যামেরায় ভিডিও করে তা বাংলা পর্নো নামে সিডি আকারে বাজারজাত করতেন। ব্যাপক ছড়িয়ে পড়া এসব সিডির কারণেই রাতারাতি নূরউদ্দিন মাহমুদ শাহীন ‘সিডি শাহীন’ নামে সমধিক পরিচিত উঠে। বহু নারীর সর্বনাশ ঘটানোর বিষয় নিয়ে ওই সময় পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক ফলাও প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ায় নড়েচড়ে বসে মহানগর গোয়েন্দা বিভাগ। তারা সিডির সূত্র ধরে উত্তরায় শাহীনের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিশেষ কৌশলে সাজানো গোছানো মিনি স্টুডিওর সন্ধান পান। সেখান থেকে যাবতীয় আলামত জব্দ করে ডিবি কর্মকর্তারা যখন মূল হোতা শাহীনকে গ্রেফতারের জন্য অভিযানের পর অভিযান শুরু করে ঠিক তখনই সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে তিনি পাড়ি জমান কানাডায়। এদিকে তার প্রতারণার শিকার শতাধিক নারীর জীবনে নেমে আসে অমানিশার ঘোর অন্ধকার। তাদের কারও আর সুখ সংসার রচনা হয়নি, আজও জীবন কাটছে সীমাহীন অবজ্ঞা, অবহেলা আর তাচ্ছিল্যে।
এদেশীয় নারীদের সর্বনাশ ঘটানো সেই সিডি শাহীনের হঠাৎই ঢাকায় আবির্ভাব ও নির্বিঘ্নে পর্নো ফিল্ম তৈরির দৌরাত্ম্য নানা মহলেই আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।