দেশে করোনাভাইরাসের টিকার চাহিদা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উৎসের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে সরকার। ভারতের সেরামের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দিয়ে দেশে ভ্যাকসিন প্রক্রিয়া শুরু হলেও, পরবর্তীতে দেশটিতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে টিকা পেতে অনিশ্চয়তায় পড়ে বাংলাদেশ।
জরুরিভিত্তিতে টিকা পেতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় উৎস হিসেবে চীন ও রাশিয়ার দিকে হাত বাড়ায়। এবার চতুর্থ উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকেও টিকা চেয়েছে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ভ্যাকসিন পেতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আমরা চাই, আমাদের সব নাগরিক যেন ভ্যাকসিন পায়। আমরা জেনেছি, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অ্যাস্ট্রেজেনেকার ৬০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন রয়েছে। আমরা চিঠির মাধ্যমে তাদের কাছে ভ্যাকসিন চেয়েছি। আমরা বলেছি, তোমরা অনুদান হিসেবে আমাদের দাও, যদি তা না হয় তোমরা চাইলে আমরা কিনে নিতেও রাজি আছি। তারা (যুক্তরাষ্ট্র) এখনও আমাদের চিঠির জবাব দেয়নি। আমরা চেষ্টা করছি, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও যেন ভ্যাকসিন পাই।
শুরু থেকেই করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতের ওপর এককভাবে নির্ভরশীলতা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে। চীন ও রাশিয়া সরকারকে বারবার ভ্যাকসিন নেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভ্যাকসিন পেতে সরকার এত দেরিতে কেন সিদ্ধান্ত নিল? এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজারের ভ্যাকসিন রাখতে হয় খুব ঠান্ডা জায়গায়। আমাদের এখানে ওই ধরনের কোনো সুযোগ নেই। এটা নিয়ে মুভ করাও কঠিন হবে, তাই ফাইজারের টিকা আনতে আমরা রাজি ছিলাম না। তবে বেসরকারিভাবে দুই একটা প্রতিষ্ঠান আনতে চেয়েছে, আমরা বলেছি; কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে, গতকাল সোমবার (০৪ মে) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, উপহার হিসেবে চীনের দেওয়া ৫ লাখ ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা ১০ মের মধ্যে বাংলাদেশে পৌঁছাতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চীনের এই টিকা আনার ব্যবস্থা করছে।
একইদিনে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জানান, দেশে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক-৫ এর জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে মে মাসের মধ্যেই এই টিকা দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ধাপে ৪০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে।