1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : জাতীয় অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনীতি
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৪ অপরাহ্ন

টিভি সিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুকে হত্যা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌর এলাকার রুদ্রগাঁও তালুকদার বাড়ির আনোয়ার হোসেনের শিশু পুত্র আদিল মোহাম্মদ সোহানকে (৮) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এছাড়া হত্যার ঘটনায় জড়িত আবদুল আহাদ (১৭) নামে এক কিশোরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আহাদ ভারতীয় টিভি সিরিয়াল সিআইডি দেখে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য আদিলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখে। বুধবার দুপুরে পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, আদিল মোহাম্মদ সোহান গত ১৫ মে সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর মসজিদ থেকে বাড়িতে না ফেরায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে পরিবার। তাকে না পেয়ে পরদিন ১৬ মে ফরিদগঞ্জ থানায় জিডি করেন। এ ঘটনায় পুলিশের তদন্তকাজ চলছিল।

 

এদিকে ১৯ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সংবাদ পেয়ে নিখোঁজ শিশুর বাড়ির পাশে আবদুল মতিনের জমি থেকে আদিলের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই দিনই শিশুর বাবা আনোয়ার হোসেন ফরিদগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশের একটি টিম মামলাটির তদন্ত শুরু করে।

পুলিশ ধারণা করে, যে সময়ের মধ্যে শিশু আদিল নিখোঁজ হয়, তা খুবই কম সময়। খুব কাছের লোকের মাধ্যমেই ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ তদন্তকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশুর গৃহ শিক্ষক আবদুল আহাদকে মঙ্গলবার আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল আহাদ জানান, সে নিয়মিত ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখেন। সেই আলোকে ঘটনার দিন মাগরিবের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে মসজিদ এলাকা থেকে আদিলকে বাড়ির পাশের নির্জন নার্সারিতে ধরে নিয়ে যায়। সেখানে আদিলের মুখ ও গলা চেপে ধরলে সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ওই সময় আহাদ তার মায়ের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আদিলের মার কাছে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য কল দেয়।

কিন্তু আদিলের মা তার সন্তানকে খুঁজতে গিয়ে মোবাইল ফোন ঘরে রেখে যান। যে কারণে ফোন রিসিভ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে কিশোর অপরাধী আহাদও আদিলের পরিবারের সাথে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। রাত ১২টার দিকে সবাই ঘরে চলে গেলে আহাদ ঘটনাস্থলে আদিলকে দেখতে যান। গিয়ে দেখেন আদিল জীবিত নেই। এরপর সে রাত একটার দিকে প্রতিবেশী রেনু বেগমের রান্না ঘর থেকে দা ও কোদাল এনে মাটি খুঁড়ে আবদুল মতিনের জমিতে আদিলের মরদেহ পুঁতে রাখে। এরপর কোদাল ও দা পানি দিয়ে পরিষ্কার করে ওই রান্না ঘরে রেখে দেয়। এরপর তার মায়ের ব্যবহৃত সীমকার্ড বাচ্চু মিয়ার পুকুরে ফেলে দেয়।

এসপি মিলন মাহমুদ বলেন, কিশোর অপরাধী আবদুল আহাদের বয়স ১৭ বছর ৬ মাস। সে একই এলাকায় শরীফ তালুকদারের ছেলে। এ বছর সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তার পরিবারে আর্থিক সংকট আছে। আদিলের গৃহ শিক্ষক হওয়ার কারণে সে ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ ছিল। সে জানতো আদিলের ঘরে কিছু টাকা আছে। যে কারণে সে এই পরিকল্পনা করে। সে সিরিয়ালে দেখেছে ৪০ সেকেন্ড মুখ চেপে ধরলে মারা যায় না এবং অজ্ঞান হয়ে থাকে। কিন্তু তার সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগেনি বরং শিশুটির মৃত্যু হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) পলাশ কান্তি নাথ, ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবদুল মান্নান, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি এএইচ এম আহসান উল্লাহসহ জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০ দৈনিক জাতীয় অর্থনীতি