ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মারধরের শিকার হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে তারই দুই ছেলে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত সহোদর আত্মগোপনে রয়েছেন। নিহতের নাম—নাজিম উদ্দীন (৫২)। তিনি উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের পিয়াজুপাড়া গ্রামের টেপু মোহাম্মদের ছেলে। গতকাল সোমবার রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে সকাল ১০টায় নিজ বাড়িতে মারধরে শিকার হন তিনি। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন—নাজিম উদ্দীনের দুই ছেলে আলাল হোসেন (২৭) ও সাইফুল ইসলাম (২০)। ঘটনার প্রসঙ্গে নাজিম উদ্দীনের চাচি মাসুমা খাতুন জানান, সকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকালে নাজিম উদ্দীনের দুই ছেলে আলাল হোসেন ও সাইফুল ইসলাম তাকে মাঠ থেকে ধরে এনে মারধর করে।
স্থানীয়রা এগিয়ে আসার চেষ্টা করলেও দুই ছেলের ভয়ভীতি ও গালিগালাজের কারণে তাকে বাঁচাতে পারেনি। নিহতের চাচাতো বোন সাবেক ইউপি সদস্য মুক্তা আক্তার বলেন, মারধরের পর বাড়িতে বারান্দায় দিনভর শুইয়ে রাখা হয় নাজিম উদ্দীনকে। রাত ৮ টায় স্থানীয়দের চাপের মুখে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, নাজিম উদ্দীনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। মৃত ঘোষণার পরই আবার তাকে নিয়ে চলে যায় স্বজনেরা। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দিনমজুর নাজিম উদ্দীনের ৫ ছেলে। মেজো দুই ছেলে ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি করে, ছোট ছেলেটি স্থানীয় বাজারে এক দোকানের কর্মচারী। বড় ছেলে আলাল ও সেজো ছেলে তাঁর বাবাকে সবার অনুপস্থিতে মারধর করে।
এ বিষয়ে নিহতের ছোট ছেলে দুলাল হোসেন বলেন, ‘বাবা মারা গেছেন শুনে বাড়িতে এসেছি। কী হয়েছে দিনভর কিছুই জানি না। মাকেও ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাচ্ছি না।’ পাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান জানান, দুই ছেলের মারধরেই নাজিমের মৃত্যু হয়েছে। রাতে শোনার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবির জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।