ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৭৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ষোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ বাজেট ঘোষণা করেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।এর আগে গত ২৬ জুলাই করপোরেশনের দ্বিতীয় পরিষদের পঞ্চদশ করপোরেশন সভায় সর্বসম্মতভাবে এ বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাজেট প্রসঙ্গে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এই বাজেট করপোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট। কিন্তু আমরা এখানেই থাকতে চাই না। প্রতি বছরই আমরা আরও বড় পরিসরে ঢাকাবাসীর কল্যাণে কাজ করতে চাই। সেজন্য ক্রমাগত আমাদের রাজস্ব আহরণের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সকলের সহযোগিতায় আমরা আমাদের রাজস্ব আহরণের সক্ষমতা বাড়াতে পারব বলে আমি বিশ্বাস করি। এটি একটি ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। তবে সেখান থেকে আমরা উত্তোরণ ঘটাচ্ছি এবং আগামী অর্থ বছরে আমরা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করবো।
তিনি বলেন, ঢাকাবাসী এবং জনগণ যেন এই বাজেটের প্রতিফলন পায়, সেটার জন্যই আমরা চেষ্টা করেছি। ৫০ বছর হোল্ডিং ট্র্যাক্স দেয়নি, এমনও আছে। আমরা সেগুলো আদায় করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আমাদের একটি বিরোধ ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে আমরা তাদের কাছে ভ্যাট পাইনি। বর্তমানে তা নিষ্পত্তি হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা ঢাকা উত্তর সিটিকে ছাড়িয়ে গেছি। এই আর্থিক বছরে বাণিজ্য আয় আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া বিদ্যুৎ বিল (আংশিক), ঢাকা ওয়াসা, তিতাস গ্যাস, ভূমি উন্নয়ন কর- এই ক্ষেত্রগুলোতে এ বছরের পর আর কোথাও আমাদের দেনা থাকবে না। আমরা (ডিএসসিসি) কারো কাছে আর ঋণগ্রস্ত থাকবে না।
বাজেট বক্তৃতায় মেয়র তাপস বলেন, আপনারা জানেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ৭০৩.৩১ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। আজ আমি আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, বিগত অর্থবছরে আমরা রাজস্ব আদায়ে পূর্বেকার সেই মাইলফলক অতিক্রম করে নতুন ইতিহাস গড়তে সমর্থ হয়েছি। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমরা কর্পোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৮৭৯.৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন মনে করে, কয়েকটি কারণে এই অসাধ্য সাধন সম্ভবপর হয়েছে। প্রথমত, ঢাকাবাসী শুধু আমাদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেননি, আমাদের ওপর পরিপূর্ণ আস্থাও রেখেছেন। ঢাকাবাসী বিশ্বাস করে, উন্নত ঢাকা গড়তে আমরা সক্ষম।
দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের ‘শূন্য সহনশীলতা’ নীতি অব্যাহত রয়েছে। বিধায় দুর্নীতি কমেছে, ফলে আয় বেড়েছে। তৃতীয়ত, সামষ্টিকভাবে উল্লেখযোগ্য হারে হয়রানি কমেছে এবং সুশাসন নিশ্চিত হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ঢাকাবাসীর আস্থা বেড়েছে এবং কর পরিশোধ করার আগ্রহও বেড়েছে। চতুর্থত, ব্যয়ের ক্ষেত্রে পূর্বেকার যে কোনো সময়ের চাইতে জবাবদিহিতা বেড়েছে এবং অপচয় রোধ হয়েছে।
এছাড়া নগরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ঢাকাবাসীর প্রাত্যহিক জীবনমানে স্বস্তি, মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, জলাবদ্ধতা নিরসন, যানযট নিরসন ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র নির্মাণ, গণশৌচাগার, খেলার মাঠ নির্মাণ, খাল সংস্কার ও নান্দনিক পরিবেশ, ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ, স্মার্ট ইকো সিটি প্রতিষ্ঠা, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা ও পথচারীবান্ধব শহর নির্মাণে কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও এ সময় জানান তিনি।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন