ডেঙ্গু প্রতিরোধে সারা বছর কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আগে আমরা মৌসুমি পরিকল্পনা নিতাম। আগে আমরা এপ্রিল, মে, জুন ও জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু প্রতিরোধের কার্যক্রম পরিচালনা করতাম। এখন বছরজুড়ে করার পরিকল্পনা নিচ্ছি।
সারা দেশে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে আজ রোববার (৯ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিটি করপোরেশন মেয়র, ওয়াসার কর্মকর্তা, কীটপতঙ্গ বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, জানুয়ারি থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ৮৭৫ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আর জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফিলিপাইনে ১৯ হাজার ৪০৪ জন, জানুয়ারি থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ভিয়েতনামে ১৫ হাজার ১২৯ জন, জানুয়ারি থেকে ১৪ মার্চ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় ১৪ হাজার ৯৮৯ জন, মালয়েশিয়ায় জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১৭ হাজার ৩৮৮ জন, সিঙ্গাপুরে জানুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত এক হাজার ৯৬২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।
এই ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থানে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিয়মিত মনিটরিংয়ের কারণে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো। শহুরে এলাকায় এডিস মশার প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি। এই কারণে আমাদের সিটি করপোরেশনের মেয়রদের নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। এখান থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়, তা বাস্তবায়ন করতে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। এই কারণে অন্য দেশগুলোর চেয়ে আমরা তুলনামূলক ভালো আছি।
গত বছর ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি ছিল, সেই হিসাবে চলতি বছরে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, গত বছরেও সমসাময়িক দেশগুলোর তুলনায় আমাদের অবস্থান ভালো ছিল। কিন্তু তাতে আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। সে জন্য আমাদের প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি আছে কি না, আরও কিছু করণীয় আছি কি না, তা খতিয়ে দেখতে এই সভা করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ডিসেম্বর পর্যন্ত আমরা করব। তবে এই সময়কে পিক সিজন ও লিন সিজনে ভাগ করা হয়েছে। অর্থাৎ এডিসের জন্য একটি উর্বর সময়, অন্যটি অনুর্বর মৌসুম। আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
বৈঠকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, এডিস মশা প্রতিরোধে আষাঢ় থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে একটি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। এছ াড়া ডেঙ্গু রোগীর বাড়িতে পরিচালনা করা হবে বিশেষ অভিযান।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রামে খালগুলো পরিষ্কার নয়, জলাবদ্ধতাও বেশি থাকে। তাই এ অঞ্চলে মশার প্রাদুর্ভাব বেশি।’ তবে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে তাদের পর্যাপ্ত জনবল ও যন্ত্রপাতি রয়েছে বলে দাবি করেন মেয়র।