বৈশাখের তৃতীয় দিন রোববার (১৬ এপ্রিল) তীব্র গরমে নাজেহাল নগরবাসী। শনিবারের মতো আজও ঢাকায় ৫৮ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শনিবার হয়েছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে ১৯৬৫ সালে সবচেয়ে উত্তপ্ত দিন পার করেছিল ঢাকাবাসী। তখন তাপমাত্রা উঠেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ছিল পাঁচ দশকে সর্বোচ্চ। তার আগে ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৭ এপ্রিল, ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৬০ সালে ঢাকায় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৮ মে রাজশাহীতে রেকর্ড ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হয়েছিল।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, গাছ ও জলাশয় আছে এমন এলাকার চেয়ে ঢাকার তাপমাত্রা গড়ে চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের ব্যবহার। এসব যন্ত্রের ব্যবহার যতই বাড়ছে, ভবনের বাইরের এলাকার তাপমাত্রা ততই বাড়ছে। আবহাওয়া বিভাগের হিসাবে গত ১০০ বছরে দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় রাজধানীর তাপমাত্রা দেড় গুণের বেশি বেড়েছে।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান জানান, দাবদাহ বছরের এই সময়ের বৈশিষ্ট্য। বৃষ্টি না হলে এই সময় তাপপ্রবাহ তৈরি হয়। এবার বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে তাপপ্রবাহ বেড়েছে। তাপপ্রবাহের সঙ্গে আর্দ্রতা বাড়ার কারণে মানুষের মধ্যে অস্বস্তি বেশি হচ্ছে। দু-তিন দিন ধরে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়েছে। ফলে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। রাতের তাপমাত্রাও কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু এখন রাতের তাপমাত্রা ও বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে তাপপ্রবাহটি বাড়ছে। প্রথমে এটি রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের কিছু জায়গা থেকে শুরু হলেও ধীরে ধীরে এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। একটা ভালো বৃষ্টি হলে এই তাপপ্রবাহ কমে যাবে।