ঢাকা শহরে প্রতিদিন তীব্র যানজট হচ্ছে। ১০ মিনিটের সড়ক পাড়ি দিতে দ্বিগুণেরও বেশি সময় লাগছে।ইজি বাইক ও রিক্সার কারণে এই যানজট তীব্রতর হচ্ছে।
সকাল থেকে শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ইজিবাইকের জট লেগে থাকে। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যায় না।বিশেষ করে অফিস শুরু এবং শেষের সময় জ্যাম দূর্বিষহ করে তুলছে জনজীবন।
এই জ্যামের কারণে সময় যেমন নষ্ট হচ্ছে, তেমনি বাড়ছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। ঢাকাবাসীর উচ্চ রক্তচাপ, বক্ষব্যাধি সহ আরো নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ ট্রাফিক জ্যাম।
জ্যামে আটকে থাকা এক ভূক্তভোগীর দাবী,অফিসে আসার আগেই জ্যামে বসে থাকতে থাকতে এই গরমে ঘেমে মনে হয় যেন পুরো গোসল হয়ে গেল,শরীরের সব পানি বের হয়ে গেল,পুরো ডিহাইড্রেটেড হয়ে যাই। সাত সকালে অফিসে ঢোকার আগেই সব এনার্জি শেষ হয়ে যায়,এতে করে কাজের অনীহা তৈরীর সাথে সাথে মাথা ব্যথা সহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছি।
যানজটের কারণে সময় ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু সেই সাথে শহরের বাসিন্দারা যানজটে বসে বসেই নানা স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। এই স্বাস্থ্য সমস্যার বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিও রয়েছে।
দুই হাজার সতের সালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান যিপজেটের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, এশিয়ার শহরগুলোর মধ্যে ঢাকাতে বাস করা সবচাইতে স্ট্রেসফুল বা মানসিক চাপের ব্যাপার। এর একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল ঢাকার যানজট।
যানবাহন যখন এক যায়গায় অনেক সময় ধরে আটকে থাকে তখন দূষিত ধোঁয়া ওই জায়গাকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, কারণ যানজটে গাড়ির ইঞ্জিন চালু রাখা হয়,গাড়ি চলমান অবস্থায় ধোঁয়া বাতাসে উড়ে যায়। এজন্য ট্রাফিক জ্যামে বসে থাকাকালীন একজন মানুষ দূষণে বেশি এক্সপোজড হচ্ছেন। দূষণের কারণে ফুসফুসের অসুখসহ নানা অসুখ হচ্ছে।
উচ্চ মাত্রায় সীসা এবং ধূলাবালি মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে। বহুদিন সীসাযুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমে আসে, কিডনি, হৃদযন্ত্র, প্রজননতন্ত্রের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।
ঢাকার যানজট নিরসনে অলস ভূমিকা পালন করছে ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ।দ্রুত এই যানজট নিরসনে কাজ না করলে অচিরেই বসবাসের অযোগ্য হবে এই রাজধানী।