গতকাল রাজধানী ঢাকার দারুস সালাম থানাধীন এলাকার মাজার রোডস্থ এলাকায় বিভিন্ন খাবার রেস্তোরাঁয় দারুসসালাম থানা পুলিশের জটিকা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে বিভিন্ন খাবার রেস্তোরাঁ থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র না রাখা ও যত্রতত্র অবস্থায় রাস্তার উপরে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে খাবার প্রস্তুত করা ও রাস্তায় সাধারণ জনগণের চলাফেরায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার দায়ে ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক মামলা রুজু করার প্রস্তুতি চলছে। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন দারুসসালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার দারুস সালাম থানা এলাকার মাজার রোডের সিরাজ চুইঝাল রেস্তোরাঁ, অগ্রণী রেস্তোরাঁ, শাহজালাল রেস্তোরাঁ সহ বেশ কয়েকটি খাবার রেস্তোরাঁয় জটিকা অভিযান পরিচালনা করেন দারুসসালাম থানা পুলিশ। অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায়, কোন রেস্তোরাঁতেই বিধি মোতাবেক কাগজপত্র নাই, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সংযোগেও নানা অনিয়ম, খাবার মান, খাবার পরিবেশ ও পরিবেশন সন্তোষজনক না। এছাড়াও, দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ডে অগ্নি নির্বাপনের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই বরং তাঁরা ফুটপাতের বেশিরভাগ অংশ দখল করে খোলা পরিবেশে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে বিভিন্ন খাবার প্রস্তুত করছেন। সবথেকে ভয়ঙ্কর বিষয় হচ্ছে, অনেক রেস্তোরাঁ ব্যবসার সাথে যুক্ত ব্যবসায়ী-কর্মচারীরা জানেই না অগ্নি নির্বাপনের জন্য কোন রকমের ব্যবস্থা রাখতে হয়।
অভিযান বিষয়ে দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আজ আমরা দারুসসালাম থানাধীন মাজার রোডস্থ এলাকায় বেশ কয়েকটি খাবার রেস্তোরাঁয় অভিযান পরিচালনা করেছি।অভিযান পরিচালনাকালে যে সমস্ত রেস্তোরাঁ গুলো কোনরকম দুর্ঘটনা বা অগ্নিকাণ্ড ঘটলে অগ্নি নির্বাপনের যন্ত্রপাতি সংরক্ষণ করেনি এবং জনগণের চলাচলের পথ রুদ্ধ করে ফুটপাতের অধিকাংশ জায়গা দখল করে যত্রতত্র অবস্থায় সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করে খাবার প্রস্তুত করছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন রেস্তোরাঁ থেকে ১৫ জনকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭৬ সালের ঢাকা মহানগর অধ্যাদেশ অনুযায়ী আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আমাদের এজাতীয় অভিযান চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য যে,গত ২৯-০২-২০২৪ ইং তারিখ রাতে রাজধানীর বেইলি রোডস্থ একটি ভবনে আগুনে ৪৬ জনের প্রাণহানি ঘটে । গ্রীন কোজি কটেজ নামের সাত তলা ওই ভবনের একটি তলা ছাড়া বাকি তলাতে রেস্তোরাঁ ছিল। ওই ভবনের জরুরী বহির্গমন সিঁড়ি না থাকার কারণে এবং নিয়মিত সিঁড়িতে রেস্তোরাঁ গুলোর গ্যাস সিলিন্ডার রাখার কারণে ভবনটিতে আগুন লাগার পর কেউ বের হতে পারেনি। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর রাজধানীসহ সারাদেশের রেস্তোরাঁগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে নানা মহল থেকে। এই প্রেক্ষাপটে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেস্তোরাঁ ভবনে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা।