রাজধানীতে যাদের বাড়িঘর আছে, সবাইকে কালো টাকার মালিক বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর জন্য অবশ্য মালিকদের নয়, তিনি দায় দিয়েছেন সিস্টেম, সরকারকে।
বুধবার অর্থনৈতিকবিষয়ক ও ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
এই ধরনের মন্তব্য করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘যে দামে বাড়ি কিংবা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন হয়, বাস্তবে তার চেয়ে দাম অনেক বেশি থাকে। কোনো জমির দাম বাস্তবে ১০ কোটি টাকা। কিন্তু দেখা গেছে, নিবন্ধন হয়েছে মাত্র এক কোটি টাকায়।
‘এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা গোপন করা হলো, তাতে কালো টাকার উৎস তৈরি হয়, যাকে আমরা বলি অপ্রদর্শিত আয়। এটা হয়েছে সিস্টেমের কারণে। আমরা যদি অটোমেশন করতে পারতাম, তাহলে এ খাতে কালো টাকার উৎস বন্ধ করা যেত।’
সিস্টেমের অভাবে সরকার যথাযথভাবে ফি ও কর পায় না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে হবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোনো ধরনের চাপে নেই। কোনো কাজ করে অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে আসি না।’
পাচারের টাকা দেশে আনার বিষয়ে বাজেটে যে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা কার্যকর করা হবে বলেও জানান তিনি।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশ থেকে পাচার করা টাকা আনলে ৭ শতাংশ কর দিয়েই তা বৈধ করার বিধান রেখেছেন মন্ত্রী। এ নিয়ে তীব্র সমালোচনায়ও পড়েছেন তিনি। তবে এই সমালোচনাকে পাত্তা দিচ্ছেন না।
মন্ত্রী বলেন, ‘যখন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রণোদনা দিয়েছিলাম, তখনও সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, এ সুবিধা দেয়ার ফলে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে।’
পোশাক খাতে বিদেশি পরামর্শকরা উচ্চ বেতন পাচ্ছে। ফলে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বের হয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক খাতে একসময় বিদেশি কনসালটেন্টের প্রয়োজন হতো। কিন্তু এখন আমাদের দেশে অনেক বিশেষজ্ঞ তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি, বিদেশি কনসালটেন্ট আর দরকার নেই। কিন্তু যারা ফ্যাক্টরি চালায়, তারা আমাকে বলেছে, বিদেশি এক্সপার্ট এখনও লাগবে। তা না হলে তাদের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে।’