বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথমদিন সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত রাস্তায় গণপরিবহন চলাচল কম দেখা গেছে। সাধারণ মানুষের চলাচলও অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচির প্রথমদিনে রাজধানীর সায়দাবাদ থেকে অন্যান্য বাসটার্মিনাল থেকে ছাড়ছে না দূরপাল্লার কোনও বাস। যেকোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ-র্যাব সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর গ্রিন রোড, তেজগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, নাবিস্কো, পান্থপথ, কলাবাগান, কারওয়ান বাজার, খিলক্ষেত, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, খেজুরবাগান এলাকায় রাস্তায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা বেশি দেখা গেছে। বাস চলাচলও ছিল অন্যান্য দিনের থেকে কম। এ সময় প্রাইভেট কার কিছুটা কম চলতে দেখা গেছে।
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা জানান, বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের জন্য এমন হয়েছে। অনেকেই ভয় পাচ্ছেন বাস বের করতে। আবার যাত্রীরা আতঙ্কে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। তবে সকাল থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শনিরআখড়া, গুলিস্তান এলাকায় অবরোধের সমর্থনে কোনো মিছিল-পিকেটিং করতে দেখা যায়নি।
এদিকে মহাখালী বাস টার্মিনালও ফাঁকা রয়েছে। অলস সময় পার করছেন পরিবহনের শ্রমিকেরা। গাবতলীতে যানবাহন কম, যাত্রীও কম দেখা গেছে। তবে বেলা যত বাড়ছে, গাড়ির সংখ্যাও বাড়ছে। সড়কে যানবাহন কম থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। দূরপাল্লার বাস কম ছাড়লেও গাবতলীতে কিছুক্ষণ পর পর সিটি বাস চলাচল করছে।
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের একটি বাসের সুপারভাইজার মো. আল-আমিন হোসেন বলেন, চারিদিকে যেভাবে বাস পোড়ানো হচ্ছে সে ভয়ে ভোর থেকে একটি বাসও এখান থেকে ছেড়ে যায়নি। বেলা বাড়লে পরিস্থিতি দেখে হয়তো বাস ছাড়তে পারে। সকাল থেকেই সায়েদাবাদ মোড়ে ওভার ব্রিজের নিচে গোল চত্বরে অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ৭০ জন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া র্যাব সদস্যরাও সেখানে আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা জলকামান, এপিসি নিয়ে প্রস্তুত আছি। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতকে মাঠে দেখা যায়নি।
এর আগে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব, গুলিস্তান ও ফুলবাড়িয়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় সড়কে গণপরিবহনের সংখ্যা কর্মদিবসের তুলনায় অনেক কম। যেসব গণপরিবহন চলছে, সেগুলোতে যাত্রীর সংখ্যাও তুলনামূলক কম।
সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তিন দিনের এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত।