এই সুকৈ খেলাকে কেন্দ্র করে হাতং এবং হাপৈং নামক দুটি পাড়ার মধ্যে একদিকে বিবাদ, প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং উদ্দীপনা। অপরদিকে দুটি গ্রামের তরুণ-তরুণী বখ্রৈ এবং বেক্রাং এর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক।
আর এই প্রেমের সম্পর্ক কিভাবে দুটো গ্রামের মধ্যকার বিবাদ ভুলিয়ে দিয়েছে সেটিই তুলে ধরা হয়েছে ত্রিপুরা ভাষার প্রথম পূর্ণদৈঘ্য ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র ‘তাক্রিদি’তে। যার অর্থ ভয় করো না।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) খাগড়াছড়ির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটে চলচিত্রটি শুভ মুক্তি দেওয়া হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার এই চলচ্চিত্রটি উপভোগ করেছেন প্রায় শতাধিক দর্শক। চলচ্চিত্রে ত্রিপুরা জাতির ভাষা, উৎসব, সংস্কৃতি, ত্রিপুরাদের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, নিজস্ব পূজা অর্চনা, জুম চাষ, বিয়ে প্রথা তুলে ধরা হয়েছে।
চলচ্চিত্রটির শুভমুক্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা। এসময় খাগড়াছড়ির পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপক দীনময় রোয়াজা, একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক প্রভাংশু ত্রিপুরা, রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত লেখক শোভা রানী ত্রিপুরা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সজীব ত্রিপুরা জানান, একটি খেলাকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রামের মধ্যকার বিবাদ কিভাবে একটি প্রেম কাহিনীর মাধ্যমে মিটে গেছে সেটি এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
পুরো গল্পতে ত্রিপুরাদের জীবনযাত্রা, সমাজ ব্যবস্থা, প্রাত্যহিক দিনের কর্মকাণ্ড থেকে প্রায় সবকিছুই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এখানে যেমন ঐতিহ্যবাহী গরয়া নৃত্য ও কাথারক নৃত্যু তুলে ধরা হয়েছে তেমনি আমাদের ঐতিহ্যবাহী জুম চাষ পদ্ধতি থেকে শুরু করে উৎসব পার্বনও ঠাঁই পেয়েছে। ভবিষ্যতে চলচ্চিত্রটি ত্রিপুরা জাতি নিয়ে গবেষণার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এছাড়াও আয়োজনের শুরুতে ছিল অনামিকা ত্রিপুরার একক সংগীতানুষ্ঠান। এসময় তিনি ত্রিপুরা, দেশাত্ববোধ, রবীন্দ্র সংগীতসহ একাধিক গান পরিবেশন করে স্রোতাদের মাতিয়ে রাখেন।