সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুঞ্জন— যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী,’ তা মিথ্যা বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। ফরাসি বার্তা সংস্থাটি এক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে জানায়, সম্প্রতি এই তথ্যটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেও, ট্রাম্প এমন কোনো বক্তব্য দেননি। বরং, ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কোনো কথা উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা অথবা বাংলাদেশ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই খবরটি ভিত্তিহীন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে পড়ার পর এএফপির ফ্যাক্টচেক বিষয়টি অনুসন্ধান করে।
এএফপি বলছে, একটি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাতের কয়েক মাস পর সামাজিক মাধ্যমের একাধিক পোস্টে মিথ্যা দাবি করা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যেহেতু শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি, তাই তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।’ শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র দেখেননি, সম্প্রতি স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এ কথা বলার পর হাসিনার পদত্যাগ ‘অবৈধ হওয়ার’ বিষয়টি সামনে আসে।
প্রসঙ্গত, গত ৯ নভেম্বর ফেসবুকে বাংলা ভাষায় লেখা একটি পোস্ট দাবি করা হয়, ‘পিবিডিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করেন তিনি। বাংলাদেশ সরকারের অবৈধ দখলদারদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘যারা বলছেন শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, তারা আমাকে পদত্যাগপত্রটি দেখান।’
ওই পোস্টে একটি ছবিও দেওয়া হয়। সেখানে দেখা যায়, পিবিডি পডকাস্টের উপস্থাপক প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের সঙ্গে বসে কথা বলছেন ট্রাম্প। ছবির ওপর বাংলায় লেখা, ‘আমি মনে করি হাসিনা এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ট্রাম্প’। একই ধরনের দাবি করে ফেসবুকে আরও অনেক পোস্ট দেওয়া হয়েছে।
এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৭ অক্টোবর ট্রাম্পের ওই সাক্ষাৎকারটি পিবিডি পডকাস্ট নামের একটি ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটির শিরোনাম ছিল ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প গেটস ইমোশোনাল-স্পিকস অন ট্যারিফস, ওবামা অ্যান্ড ইরান’। ১ ঘণ্টা ২৬ মিনিটের ওই ভিডিও সাক্ষাৎকারে হাসিনা বা বাংলাদেশ নিয়ে একটি কথাও বলেননি ট্রাম্প। তার ওই সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল এবিসি নিউজ। সেখানেও বাংলাদেশ নিয়ে ট্রাম্পের কথা বলার কোনো প্রমাণ মেলেনি।