মুস্তাকিম নিবিড়ঃ টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়ক পেড়িয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ হয়ে উঠছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কঠোর পরিশ্রমে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তণ এসেছে। বিভিন্ন সড়ক মহাসড়ক এর ব্যাপক কর্মযজ্ঞ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা কে করে তুলেছে সহজ এবং আরামদায়ক। যাতে অনেক সময় বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে যোগাযোগের ক্ষেত্রে, যার ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতে।
উন্নয়ন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ এর মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নিমিত্ত একটি নিরাপদ আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর টেকসই ব্যয় সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের লক্ষ্য। এ অবধি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতায় মহাসড়ক নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার। ১১০ টি জাতীয় মহাসড়ক যার দৈর্ঘ্য ৩৯৯১ কিলোমিটার। ১৪৭ টি আঞ্চলিক মহাসড়ক যার দৈর্ঘ্য ৪৮৯৭ কিলোমিটার এবং ৭৩৫ টি সড়ক নিয়ে মহাসড়ক নেটওয়ার্ক বিস্তৃত।
সওজ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাদিন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অল্প ১৫৫ টি, যার মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে ২৮ টি, ১৫৫ টি চলমান প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে জিও বি অর্থায়নে ১৩৩ টি বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট ২০ টি এবং কারিগরি সহায়তায় ২টি। ১৮৬ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার ফ্লেক্সিবল প্রেসেন্ট নির্মাণ, ৮০৩ দশমিক তিন কিলোমিটার সারফেসিং, ৬৬ দশমিক ৮২ কিলোমিটার রিজিভ পয়েন্ট নির্মাণ, ৩৩০ দশমিক ৮৪ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্ত করণ, ৩৯৮ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার মহাসড়ক মজবুতিকরণ, ১৩৬টি ৯৯৫০ মিটার কংক্রিট সেতু নির্মাণ, ৪১৪ টি কালভার্ট নির্মাণ আটটি ফ্লাইওভার ৭২ টি ওভারপাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়াও পরিচালন খাতে অসংখ্য মহাসড়ক ওভারেল, মহাসড়ক ডাবল বিটুমিনাস সারফেস ট্রিটমেন্ট, ২৩৯ কিলোমিটার মহাসড়কে বিটুমিনাস কার্পেটিং ও সিলিকট, ২৫৩৫ কিলোমিটার মহাসড়কে রিপেয়ার সহ-সিল কোড ডিবিএসটি, ৭৪ কিলোমিটার মহাসড়ক মজবুতিকরণ, ৫৪ কিলোমিটার প্যাডম্যান নির্মাণ, ১৭৭৯২ মিটার ড্রেন নির্মাণ ৩৪ হাজার ৯৯৯০ মিটার রক্ষা প্রদো কাজ ২৫টি কমপ্লিট সেতু নির্মাণ এবং ৬৭ আরসিসি কালভার্ট নির্মাণ সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবনাধীন রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির এক অনন্য অর্জন। রাজস্ব আয় ২০২২ ২৩ অর্থবছরে ১১২১ দশমিক ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে সওজ। যার মধ্যে ৭৪৫ কোটি টাকাই ঢাকা জোনের অর্জন।
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সেতু, মধুমতি সেতু, এটিএম নাসিম ওসমান সেতু ও একদিনের শত সেতু উদ্বোধন সারা বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ডিসেম্বর ২০২২ এ ৮ বিভাগের ৫০ টি জেলায় ২০২১.৫৬ কিলোমিটার উন্নয়নকৃত মহাসড়ক উদ্বোধন করেন, যা সামগ্রিকভাবে দ্রুত নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের ফলে উন্মোচিত হয়েছে আর্থসামাজিক উন্নয়নের সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত।
উদ্বোধনকৃত উল্লেখযোগ্য মহাসড়ক সমূহের মধ্যে রয়েছে জয়দেবপুর থেকে চন্দ্রা টাঙ্গাইল ও এলেঙ্গা পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ক, সিলেট টু ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক, ইজতেমা মহাসড়ক, রাজশাহী নওগাঁ মহাসড়ক, খুলনা চুকনগর সাতক্ষীরা মহাসড়ক। জয়দেবপুর টাঙ্গাইল জামালপুর মহাসড়ক। কক্সবাজার সড়ক বিভাগা ধীন তিনটি মহাসড়ক উল্লেখযোগ্য।
প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রতিশ্রুত সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রকল্পের সংখ্যা ৬০টি, ২০২৪ সালের মধ্যেই ৩৮ টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকিগুলো বাস্তবায়নাধীন অবস্থায়।
২০২২ ২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি জিও বি অর্থায়নে ১৩৩ টি এবং তাহলে ২২ টি সহ মোট ১৫৫ টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ধিন ছিল। যার মধ্যে ১০০০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে মেগা প্রকল্প ছিল ৩৪টি। যার ২৮ টি এ অবধি সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে।
২০২২ ২৩ অর্থবছরে ১৩ টি নতুন প্রকল্প একনেক কর্তৃক অনুমোদিত হয়, যার মধ্যে সাতটি মহাসড়ক উন্নয়ন দুটি সেতু নির্মাণ তিনটি কারিগরি সহায়তা ও প্রাতিষ্ঠানিক বৃদ্ধি এবং একটি ভূমি অধিগ্রহণ সাপোর্ট প্রকল্প।
বৈদেশিক সহায়তা পুষ্ট মেগা প্রকল্প এরমধ্যে দুইটি মেগা প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে ( সাসেক রোড কানেক্টিভিটি প্রজেক্ট এন-৪) এছাড়াও উল্লেখযোগ্য চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এবং অসমাপ্ত অবস্থায় নির্মাণ কাজ চলমানাধীন রয়েছে বহু সংখ্যক প্রকল্প ও মেগা প্রকল্পের।
বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে সকল প্রকল্প ও মেগা প্রকল্প গুলো বাস্তবায়িত হলে দেশের যোগাযোগ খাতের সফলতায় ঈর্ষান্বিত হবে গোটা দক্ষিণ এশিয়া। বিশ্ব অবাক হয়ে দেখবে ও শুনবে একাত্তরের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটির উন্নয়নের রূপকথা।