নিজস্ব প্রতিবেদক : দলীয় চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চেয়ে দেশে এখন কেউ আর গরিব নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আজকে কিছুই নাই, কিছু রেখে যাননি। বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার চেয়ে আর গরিব কেউ নেই। নিজের একটা বাড়ি নেই। ভাড়া বাড়িতে থাকেন। প্রায়ই নোটিশ পান। ভাড়া পরিশোধ করা যায় না।’
বুধবার দুপুরে এক মানববন্ধনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন। পুরান ঢাকার মোগলটুলিতে জিয়াউর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া অর্থকষ্টে আছেন জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন খালেদা জিয়ার যা উপার্জন, যা সম্পদ আছে বৈধভাবে সার্টিফিকেট দিয়েছে। তাহলে তার অ্যাকাউন্ট সিজ করে কেন? কেন তিনি অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকার বেশি তুলতে পারেন না। ঢাকা শহরে একজন নেত্রীর ৫০ হাজার টাকায় তার কীভাবে চলে, কীভাবে তার চিকিৎসা চলে?’
পুরান ঢাকার স্কুলের নাম থেকে জিয়াউর রহমানের নাম বদলের কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে গয়েশ্বর বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একটি ইতিহাস। এদেশ একটি যুদ্ধের ইতিহাসের মধ্য দিয়ে, এই দেশ রক্ত বিসর্জন দিয়ে, এই দেশ বাংলা ভাষা, জীবন ও রক্ত দিয়ে। যাদের রক্তে লেখা এই স্বাধীনতা, তাদেরকে রক্তকে অপমান করার দুঃসাহস দেখাবেন না।’
সিটি করপোরেশনের এমন? উদ্যোগের সমালোচনা করে গয়েশ্বর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি বলব, এবাউট টার্ন। আবারও বলব, ভ্রাতুষ্পুত্রকে (ফজলে নূর তাপস) বলেন- তিনি যেন নিজ হাতে মোগলটুলিতে জিয়াউর রহমানের নামের সাইনবোর্ডটা লাগিয়ে দিয়ে আসেন। তা না হলে যেদিন ক্ষমতার পরিবর্তন হবে, বাংলাদেশে ভাঙাচুরি যে শুরু হবে সেটা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা তখন আপনার থাকবে না-এই কথাটা ভাবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, ‘প্রতিহিংসা বাদ দেন। কম তো খান নাই, অনেক খাইছেন। এসব খেতেও পারবেন না, কবরে নিয়েও যেতেও পারবেন না। সেই কারণে বলব, স্বেচ্ছায় মানে মানে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। আপনি যদি স্বেচ্ছায় জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে দেন তাহলে মান ইজ্জত বাঁচবে। আর জনগণ যদি ক্ষমতা থেকে নামায় মান-ইজ্জত-অর্থ-বিত্ত সবই হারাবেন।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে যত স্মৃতিসৌধ, কত কিছু বানাচ্ছেন। সেগুলো রক্ষার স্বার্থে হলেও ইতিহাসে হাত দেবেন না। যে যেখানে আছে রাজনৈতিক কারণে, ঐতিহাসিক কারণেই জাতির সামনে তারা এখানে আছে। তাদেরকে থাকতে দিন, তাদের নাম রাখতে দিন। মানুষের হৃদয়ে আঘাত করলে সেই আঘাতের পাল্টা আঘাত আসবে তখন কোনো ক্ষমতায়ই টিেিক্য় রাখতে পারবে না।’
স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় এই মানববন্ধনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, খন্দকার মারুফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সুলতান মো. নাসির উদ্দিন, আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল, রফিক হাওলাদার, ইয়াসীন আলী, সাদরেজ জামান প্রমূখ বক্তব্য দেন।