প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের নেওয়া নানান পদক্ষেপের কারণে দেশে দরিদ্র ও হতদরিদ্রের সংখ্যা কমেছে। ২০১৬ সালে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে। পাশাপাশি একই সময়ের ব্যবধানে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী ১২ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে। বলা হচ্ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩১ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (এইচআইইএস) ২০২২’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বুধবার (১২ এপ্রিল) আনুষ্ঠানিকভাবে এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করবে সরকারি সংস্থাটি।
বাংলাদেশে দারিদ্র্য, আয়-ব্যয়, ভোগ সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য তথ্য প্রদানের জন্য একটি স্বতন্ত্র জরিপ হলো এইচআইইএস। এটি আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, অভিবাসন এবং রেমিট্যান্স ইত্যাদি বিষয়েও তথ্য সরবরাহ করে। ২০২২ সালের জরিপের জন্য সারা বছরজুড়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সারা দেশের ৭২০টি নমুনা এলাকায় এই জরিপ পরিচালিত হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে ২০টি করে মোট ১৪ হাজার ৪০০ খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
বিবিএস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দারিদ্র্য নিরসনে সরকারের বাস্তবসম্মত হস্তক্ষেপের ফলে দারিদ্র্য কমেছে। সোশ্যাল সিকিউরিটি প্রোগ্রাম (এসএসপি) যেমন- বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ভিজিডি, ভিজিএফ, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা, দরিদ্রদের জন্য আয়বর্ধক কর্মসূচি, আশ্রয়ণ প্রকল্প, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচি ইত্যাদি দারিদ্র্য কমাতে অবদান রেখেছে। ভবিষ্যতেও এসব কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সার্বিকভাবে ১৯৯০ সাল থেকে দেশে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে। সেই উন্নতির সুবিধা পাওয়া গেছে। শিল্প কারখানার প্রসার ঘটেছে। ফলে দারিদ্র্যের হার কমেছে। তবে যে হারে দারিদ্র্য কমার দরকার তা কমছে না। উন্নয়নের ফল সবার কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায়নি।
অর্থনীতিবিদ ড. এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কত সেটা বিতর্কের বিষয়। সরকার বলছে দারিদ্র্য কমেছে। তবে সানেম (বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং) বলছে বেড়েছে। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। মূল্যস্ফীতি বাড়লে দারিদ্র্য ঘনীভূত হয়। এতে দারিদ্র্য বেড়ে যায়। সুতরাং বিবিএসের রিপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।