আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জনগণের উন্নয়ন এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করেই আমরা বাজেট দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে দেশকে স্বাবলম্বী করা। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। পরমুখাপেক্ষী হতে চাই না। ভিক্ষা করে চলতে চাই না। আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে, দেশ হিসেবে থাকতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘এত বাধা, এত প্রতিরোধ, এত সমালোচনা—এত কিছু হচ্ছে, কিন্তু আমাদের অর্থনীতির চাকা যাতে সচল থাকে সে জন্য যথাযথ ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ এত দিনে অনেক দূর, অনেক উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হতে পারত। তবে আমি বলব, এখানে ভয়ের কিছু নেই। সময় সময় সমস্যা তো আসেই। এটা দেখে ঘাবড়ালে চলবে না, এটা মোকাবেলা করতে হবে।’
জাতির সামনে আওয়ামী লীগের বিকল্প কেউ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণ বারবার ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করেছে এবং দেশের সেবা করতে পেরেছি বলে আজকে আমরা দেশটাকে এই উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসতে পেরেছি। দারিদ্র্যের হার কমাতে পেরেছি। আজকে বেকারত্বের সংখ্যা মাত্র তিন ভাগ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন আগে বিদ্যুতের একটা অভাব ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও স্যাংশনের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে যায়। এমনকি কয়লা, এলএনজি বা তেল পাওয়াও যাচ্ছিল না। যা হোক সেটা থেকে আমরা মুক্ত হচ্ছি। সবাইকে এটাই বলব, বিদ্যুত্ উত্পাদনে যে খরচ সেটা তো সবাইকে দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে আর কত ভর্তুকি আমরা দেব। সেটাই আমাদের প্রশ্ন। কাজেই বিদ্যুত্ ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হবেন, সেই আহ্বান জানাই।’ এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রাখার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর আহ্বানের কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশবাসী প্রত্যেকেই তাদের পতিত জমিতে চাষ শুরু করেছে। আমি নিজেও করছি। গণভবন এখন প্রায় খামার বাড়ি।’
রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করব, সেই কাজই শুরু করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ চিহ্নিত করা হয়েছে; তা হলো স্মার্ট সিটিজেট, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট ইকোনমি। আমরা পরনির্ভরশীল থাকতে চাই না। আত্মনির্ভরশীল হতে চাই। আত্মমর্যাদাশীল হতে চাই। এ জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘সংসারে নারীরা যে কাজ করেন, এটা কিন্তু বিরাট কর্মক্ষেত্র। এটা কিন্তু হিসাবে নেওয়া হয় না। এটা হিসাবে নেওয়া হলে পুরুষের চেয়ে নারীরা অনেক অগ্রগামী হতো। সেটা বাদ রেখে হিসাব হয়েছে। অর্থমন্ত্রীকে বলব, আগামী দিনে যেন গৃহস্থালির কাজকেও হিসাবে নেন। সেখানেও কিন্তু নারীরা উত্পাদনমুখী কাজ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠান, দপ্তরের কাছে সরকার থেকে নেওয়া ঋণের সুদ, আসল এবং বিনিয়োগের মুনাফা বাবদ বিপুল অঙ্কের অর্থ পাওনা রয়েছে। অর্থ বিভাগ এসব পাওনা আদায়ের জন্য চেষ্টা করছে। সব প্রতিষ্ঠানকে অর্থ পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাদের বিদ্যুতেও আছে। অনেক জায়গায় বিল দেওয়া হয়নি। সেগুলো আমরা দিয়ে দেব।’ তিনি আরো বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন। এই দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্বদরবারে বিজয়ী জাতি বাঙালি মাথা উঁচু করেই চলবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা হয়েছে। এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমাদের মোট ঋণ আন্তর্জাতিক টেকসই ঋণ ব্যবস্থাপনার মাপকাঠির বেশ নিচেই রয়েছে। অর্থনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিরাময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করব। সেই কাজ শুরু করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ চিহ্নিত করা হয়েছে; তা হলো স্মার্ট সিটিজেট, স্মার্ট সোসাইটি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট ইকোনমি। আমরা পরনির্ভরশীল থাকতে চাই না। আত্মনির্ভরশীল হতে চাই।’ এ জন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন শেখ হাসিনা।