আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় ফের দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ লকডাউন অন্ততপক্ষে নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ সময় শুধু জরুরি পণ্য ক্রয়, এক ঘণ্টার জন্য ব্যায়াম করতে ও চিকিৎসার প্রয়োজনে লোকজনকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।
বাড়ির বাইরে আসা প্রত্যেককে বিশেষ ডকুমেন্ট বহন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছ, পুলিশ এগুলো খতিয়ে দেখতে পারে বলে জানিয়েছেন ম্যাক্রোঁ।
জরুরি নয় এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যেমন রেস্তোরাঁ ও বার, বন্ধ থাকবে; কিন্তু স্কুল ও কারখানা খোলাই থাকবে।
বিবিসি জানিয়েছে, এপ্রিলের পর থেকে ফ্রান্সে কোভিড-১৯ এ একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মঙ্গলবার দেশটি পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার নতুন রোগী শনাক্ত ও ৫২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে।
বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকিতে আছে এবং এটি প্রথমটি থেকে আরও কঠিন হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।”
মার্চ-এপ্রিলে ফ্রান্স আট সপ্তাহের জন্য লকডাউনে ছিল। ওই সময় কোভিড-১৯ মহামারীতে মৃত্যু ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল। তখন মহামারী নিয়ন্ত্রণে লকডাউন কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল।
কিন্তু ১১ মে থেকে বিধিনিষেধ শিথিলের পর সংক্রমণ ফের ছড়িয়ে পড়া শুরু হয়।
এখন মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রগুলো ফের রোগীতে উপতে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার রোগীর মৃত্যু হয়েছে যা বিশ্বের সপ্তম সর্বোচ্চ সংখ্যা।
চলতি মাসের প্রথমদিকে ম্যাক্রোঁ রাজধানী প্যারিসসহ বড় শহরগুলোতে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করেছিলেন। কিন্তু চলতি সপ্তাহে দেশটির কর্মকর্তারা স্বীকার করেন, সংক্রমণ হার নামিয়ে আনার জন্য ওই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় বলে প্রমাণ হয়েছে এবং পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে ফ্রান্সের প্রতিবেশী জার্মানিও জরুরিভিত্তিতে লকডাউন জারি করার ঘোষণা দিয়েছে। ২ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এ লকডাউন ফ্রান্সের মতো কঠোর না হলেও জার্মানিতে রেস্তোরাঁ, বার, জিম, নাট্যশালা, সিনেমা ও সুইমিংপুল বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।