পুলিশের যেসব সদস্য খারাপ আচরণ করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য দুর্ব্যবহার করেছেন তাদের ন্যূনতম ছাড়ও দিচ্ছি না। কিন্তু অনুরোধ রইলো, ধারণাবশত আমাদের বিরুদ্ধে সবসময় সমালোচনা করবেন না। থানায় আসেন, দেখেন আমাদের পরিবর্তন। যদি মনে করেন কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন হয়নি, আমাদের দরজা আপনাদের জন্য খোলা রয়েছে।
ডিএমপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত নাগরিক সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মানুষকে সেবা দিতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি। আমাদের যে ঔপনিবেশিক মানসিকতা ছিল মানুষকে প্রজা হিসেবে দেখার, তা থেকে বেরিয়ে একটি সার্ভিস অরিয়েন্টেড বাহিনী তৈরি করার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আপনাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। কোথাও অপরাধ কিংবা অবিচার হতে দেখলে আমাদের অবহিত করেন, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনার সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব ঘটনার তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি নেই।
শফিকুল ইসলাম, আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি, এই নগরীর দুই কোটি মানুষের সেবায় আমরা সর্বদা সচেষ্ট আছি। আপনারা যখন পরিবার নিয়ে রাতে ঘুমাচ্ছেন, আমরা হাজার হাজার পুলিশ আপনার সম্পদ পাহারা দিচ্ছি। যখন আপনি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখেন, সেই প্রতিষ্ঠান পরেরদিন খুলে মালামাল যাতে অক্ষত পান সেজন্য আমরা কাজ করছি। আপনারা যখন ঈদ, পূজা-পার্বন করছেন, তখন আমাদের ছুটি নেই, আমাদের মা-বাবার সঙ্গে ঈদ-পূজা উদযাপনের কোনো সুযোগ নেই। আপনারা যাতে নিরাপদে উৎসব উদযাপন করতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করছি। আপনারা যখন সন্তানকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছেন, তখন আমি কন্ট্রোল রুমে বসে নির্দেশনা দিচ্ছি। কিন্তু আমার সন্তানটিও পরীক্ষা দিতে যায়, আমি নিয়ে যেতে পারি না।
তিনি বলেন, আপনারা যদি মনে করেন পুলিশ এককভাবে চেষ্টা করে মানুষের আস্থা অর্জন এবং বন্ধু হতে পারবে, তা সম্ভব না। আমি আপনাকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলাম আর আপনি কোনো ধারণা ছাড়াই আপনারা যখন বলছেন ঘুষখোর, তখন কী বন্ধুত্ব কি প্রত্যাশা করতে পারেন? এই পুলিশ বাহিনীতে মন্দলোক যারা আছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইজিপি স্যারের নেতৃত্বে আমাদের জিহাদ চলছে।
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ভালো মানুষকে রিক্রুট করার জন্য আইজিপি অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কোনো রকম চাপের কাছে তিনি নতি স্বীকার করছেন না। মেধা অনুসারে একটি পয়সা খরচ করা ছাড়াও তারা চাকরি পাচ্ছেন। পুরো দেশের পুলিশ সদস্যদের পদোন্নতির জন্য যে সিস্টেম তিনি চালু করেছেন, সেন্ট্রালি (কেন্দ্রীয়ভাবে) পরীক্ষা হচ্ছে, সেন্ট্রালিই মেধা তালিকা হচ্ছে। হস্তক্ষেপ কিংবা তদবির করার কোনো সুযোগ নেই। পদায়নকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। একটি পদায়ন টাকা লেনদেনের মাধ্যমে হচ্ছে তা কেউ প্রমাণ করতে পারবে না।
এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে বলেন, আমরা অহংকার করে বলতে পারি, আমাদের প্রতিটি অর্জন প্রধানমন্ত্রীর অবদানেই হয়েছে।