দেশের দ্রুত বর্ধনশীল মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদ’র মাধ্যমে দৈনিক ৪০০ কোটি টাকা লেনদেন করেন গ্রাহকরা।
গত বছরের নভেম্বর মাসে নগদ’র মাধ্যমে দৈনিক লেনদেন হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা।
শুধু লেনদেনই নয় নগদ’র গ্রাহকও বেড়েছে। এখন নগদ ব্যবহার করেন তিন কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক। চার মাস আগে গ্রাহক সংখ্যা ছিলো দুই কোটি।
মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে নগদ’র দুই বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন আয়োজকরা।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, নগদ বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। নগদ’র ৫১ শতাংশ মালিক ডাক বিভাগ বাকি ৪৯ শতাংশ কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ ও ব্যক্তি। ডাক বিভাগের অধীনে নগদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্সের আবেদন করেছে। এ সংক্রান্ত আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পরে সেটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পাবে নগদ।
অনুষ্ঠানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে নতুন চমক নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দেশের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে বিশ্বখ্যাত কিছু ‘জায়ান্ট’ কয়েকটি টেকনোলজি কোম্পানির সঙ্গে এখন কাজ করছে যারা ‘নগদ’র বিনিয়োগ করবে। ইতোমধ্যে ডিউডেলিজেশন্স’র কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এসব কোম্পানি বাংলাদেশের আর্থিকখাতে আকর্ষণীয় অংকের বিনিয়োগ করাসহ অভিনব প্রযুক্তি নিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে।
তানভীর এ মিশুক বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনার জন্য এদেশে অনেক প্রতিষ্ঠানের আগে অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু খুব কমই সফলতা এসেছে। কিন্তু নগদ এমন কিছু প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করতে যাচ্ছে, যা দেশের আর্থিক উন্নয়নে অভূতপূর্ব অবদান রাখবে।
তিনি বলেন, এত অল্প সময়ে ‘নগদ’র সফলতা দেখে অনেকেই আশ্চর্য হচ্ছেন! যে কারণে অনেকে হিংসার অংশ হিসেবে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য পরিবেশন করছেন। অবশ্য হিংসা করারই কথা! বাজারে আসার দুই বছরের মধ্যে ‘নগদ’র দৈনিক লেনদেন প্রায় ৪০০ কোটি টাকা এবং গ্রাহক সংখ্যা প্রায় চার কোটির কাছাকাছি, যা সবার কাছেই অবাক হওয়ার মতো বিষয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তানভীর এ মিশুক বলেন, কিছু গুজব বাজারে ভাসছে, খুব শিগগিরই মানুষ গুজবগুলো সম্পর্কে পরিষ্কার হয়ে যাবে। কারণ এমন একটি প্রতিষ্ঠান আরও ওপরে যাক, এটা অনেকেই চাইছে না। কিন্তু এ দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার কারণে ‘নগদ’ আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের মানুষকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে আনতে ‘নগদ’ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
অপর এক প্রশ্নে জবাবে ‘নগদ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাহেল আহমেদ বলেন, বতর্মান এমএফএস বাজারে ‘নগদ’র শেয়ার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। ‘নগদ’ এখন যা কিছুই করছে, তা সামনের দিনে বাজারে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করার উদ্দেশ্যেই করছে।
তিনি বলেন, ‘নগদ’ ফাইন্যান্সিয়াল সেবা নিয়ে কাজ করলেও এটি একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সেবা, যে কারণে ‘নগদ’কে সরাসরি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তুলনা করাটা উচিত হবে না। প্রান্তিক মানুষ যেন ধরতে পারে, বুঝতে পারে এমন কমিউনিকেশন নিয়েও কাজ করছে ‘নগদ’। সারাদেশে ১ লাখ ৫৫ হাজার এজেন্ট ও ২ লাখ ৩৮ হাজার উদ্যোক্তার মাধ্যমে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা মানুষকে সেবা দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডাক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জাকির হাসান নূর, ‘নগদ’র নির্বাহী পরিচালক মো. সাফায়েত আলম এবং ‘নগদ’র সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের অ্যাডভাইজার নিয়াজ মোর্শেদ এলিট প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।