ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকী। আর তাই স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করার জন্য ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। যত ঝামেলায় সহ্য করতে হয় তবুও যেতে হবে বাড়ী তাই সব ঝামেলাই মাথা পেতে নিতে রাজি। অনেকেই মাইলের পর মাইল হাঁটছেন। তাদের সঙ্গে রয়েছে পরিবার ও ব্যাগ ভর্তি জিনিসপত্র।
সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ। চলছে না ট্রেন, লঞ্চও। নিরুপায় ঘরমুখো মানুষ ঈদ করতে যে যেভাবে পারছে ছাড়ছে ঢাকা। নাড়ির টানে ছুটছে গ্রামের দিকে। সামর্থ্যবানরা ভাড়া করছেন প্রাইভেট কার-মাইক্রো। নিম্নবিত্তরা যাচ্ছেন ট্রাক, পিকআপে গাদাগাদি করে। অনেকে আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছেন। মাঝে-মধ্যে মিলছে দূরপাল্লার বাসও।
ঢাকার প্রবেশমুখের অদূর থেকে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে ছাড়ছে এসব বাস।
গাবতলী, হেমায়েতপুর ও সায়েদাবাদ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক হাজার মানুষ বাড়িতে যাওয়ার জন্য যানবাহন খুঁজছেন হন্যে হয়ে। অধিকাংশ মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মানছিলেন না। গাবতলিতে গণপরিবহন না পেয়ে অনেককেই পায়ে হেঁটে বা অটোরিকশায় সেখান থেকে আমিনবাজারের দিকে রওনা হয়েছেন। আমিনবাজার এলাকায় ঘরমুখী মানুষের প্রচুর ভিড় দেখা গেছে।
লেগুনা, ট্রাক কিংবা মোটরসাইকেলে চড়ে অনেকেই দুই বা তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এমনকি অনেকে পায়ে হেঁটেও লম্বা পথ পাড়ি দিচ্ছেন।
এদিকে লঞ্চ ও ফেরি বন্ধ থাকায় সবচেয়ে ভোগান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। ভোর থেকেই মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় করছেন ঘরমুখো হাজারো মানুষ। মাঝে-মধ্যে এম্বুলেন্স পারাপারের জন্য ফেরি ঘাটে ভিড়লেই হুড়মুড়িয়ে উঠে পড়ছেন তারা। সকাল ১০টায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে তিন সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে গাদাগাদি করে ফেরি যমুনা বাংলাবাজার ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ঢাকার জুরাইন চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা মো. সজীব বেপারী জানান, তার বাড়ি মাদারীপুর। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য খুব ভোরে রওনা হয়ে ঘাটে পৌঁছেছেন তিনি। কিন্তু ঘাটে এসে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও পার হতে না পেরে হতাশ তিনি।
তিনি বলেন, ভাই আমি ব্যাচেলর মানুষ। আমি একা কী করে ঢাকায় ঈদ করি? তাই বাড়ি যাচ্ছি বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ করার জন্য।
ওদিকে পাটুরিয়া ঘাট থেকেও সকাল থেকে তিনটি ফেরি ঠাসাঠাসি করে কয়েক সহস্রাধিক যাত্রী ছেড়ে যায় দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশে।