নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের জয় যেন আকাশ কুসুম কল্পনা। বছরের পর বছর ব্ল্যাকক্যাপসদের ডেরায় খেলেও ওয়ানডেতে জয়ের দেখা মিলছিল না। যার দেখা মিলেছিল চলতি সিরিজের প্রথম দুটি ওয়ানডেতেও। কিন্তু তৃতীয় ওয়ানডেতে যেন ভাগ্য বিধাতা চেয়ে দেখলেন টাইগারদের প্রতি। এতে করে তাসমান দ্বীপের দেশটিতে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ডের দেয়া ৯৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা। এ জয়ের মধ্য দিয়ে কিউইদের মাটিতে ওয়ানডে ম্যাচের জয়ের আক্ষেপ ঘুঁচলো।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) হোয়াটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে টাইগার পেসারদের তাণ্ডবে মাত্র ৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ দশমিক ১ ওভারেই ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে শান্ত বাহিনী।
কিউইদের ছুঁড়ে দেওয়া অল্প পুঁজি তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেছিলেন দুই টাইগার ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সৌম্য সরকার। তবে ব্যাট হাতে নামার পর থেকেই কিছুটা চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন সৌম্য। একবার চোখে পানি নেওয়ার পর ড্রপও দেওয়া হয়। তবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন এই ওপেনার। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ৪ রান।
সৌম্য ফিরলে সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাকি কাজটা সারেন বিজয় ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্ত। তবে দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন বিজয়। উইলিয়াম ও’রর্ককের লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়ে ৩৭ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
বাকি সময়টা দেখেশুনে খেলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন শান্ত ও লিটন। দলের এমন স্মরণীয় জয়ের দিনে নিজের ফিফটিও তুলে নেন টাইগার দলপতি। অন্যদিকে এক রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সতর্কতার সঙ্গে স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন কিউই ওপেনার উইল ইয়ং ও রাচিন রবীন্দ্র। দলীয় ১৬ রানে প্রথম আঘাত হানেন তানজিম হাসান সাকিব। রাচিন রবীন্দ্রকে উইকেটের পেছনে মুশফিকের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান তিনি। দলীয় ২২ রানে আগের ম্যাচের শতক না পাওয়া হেনরি নিকোলসকে অধিনায়ক শান্তর ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সাকিব।
দলীয় ৫৮ রানে অধিনায়ক ল্যাথামকে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলাম। অন্যদিকে উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন উইল ইয়ং। কিন্তু দলীয় ৬১ রানের তার সে চেষ্টায় বাধ সাধেন শরিফুল। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত তারা মাত্র ৯৮ রান করতে সক্ষম হয়। কিউইদের চারজন ব্যাটারই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পেরেছিলেন। দলীয় সর্বোচ্চ রান আসে ইয়ংয়ের ব্যাট থেকে।
বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম, তানজিম সাকিব ও সৌম্য সরকার ৩টি করে উইকেট লাভ করেন।
২০১৬ সালের পরে নিজেদের মাটিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে আবারও অলআউট হলো কিউইরা। আর নিজেদের ইতিহাসে ৮ম বারের মতো একশ’র আগে আউট হলো তারা। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তাদের সর্বনিম্ন স্কোর, সব মিলিয়ে দেশের মাটিতে এটি তাদের চতুর্থ সর্বনিম্ন স্কোর। ২০০৭ সালের পর দেশের মাটিতে যেটি তাদের সর্বনিম্ন।