নিজস্ব প্রতিবেদক :
ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান নিক্সন চৌধুরী চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানাকে (টিএনও) গালিগালাজ করার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ওই ভয়েসটাই (কণ্ঠস্বর) আমার না। মঙ্গলবার ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শনিবারের ভাইরাল হওয়া ফোনালাপ প্রসঙ্গে নিক্সন বলেন, ‘প্রথমে আমি এসিল্যান্ডকে (সহকারী কমিশনার, ভূমি) ফোন করেছিলাম। “আমি দেখতেছি”, বলে তিনি ফোনটা বন্ধ করে দেন। পরে আমি আপাকে (টিএনও) ফোন করলাম যে, আপা আমার একটা লোক ধরা পড়ছে আপনি একটু দেখেন। সে কোনও অন্যায় করেনি, মাঠে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল। তাকে বিজিবি ধরে নিয়ে গেছে। আপনি একটু ব্যবস্থা নেন। এই কথাটুকুই আমি তাকে বলেছি। বাকি কোনও কথা আমার না। এটা আপনি টিএনও সাহেবকে জিজ্ঞেস করলেই পাবেন।
তিনি আরও বলেন, আপনারা জিজ্ঞেস করেন, এই গালিগুলো আমি টিএনও’কে দিয়েছি কিনা। সুনির্দিষ্টভাবে প্রমাণ করুন যে, এই ভয়েসটা আমার। এই ক্লিপগুলো একেক জায়গা থেকে কেটে নিয়ে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশিত গালিগালাজের বিষয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার আর টিএনওর কথাই শুধু ভাইরাল হয়নি, পুলিশ প্রশাসন ও টিএনওর কথাও ভাইরাল হয়েছে। দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য কোনও মহল এই কাজটা করেছে। সরকারের দায়িত্ব এটা খুঁজে বের করা।
তার বিরুদ্ধে মামলা হলে ডিসির বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত মন্তব্য করে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি যদি নির্বাচনি আইন ভঙ্গ করি তাহলে পরদিন সকালে ডিসি সাহেব নির্দেশ দিয়ে টিএনও সাহেবকে কেন আমার বাড়িতে পাঠালেন? টিএনও কি নির্বাচনকালীন ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আমার বাড়িতে আসতে পারেন? তাহলে তো তিনিও আইন ভঙ্গ করেছেন। আমি যদি আইন ভঙ্গ করে থাকি তাহলে ডিসি সাহেবও আইন ভঙ্গ করেছেন, নির্বাচনি আইন লঙ্ঘন করেছেন। তার বিরুদ্ধেও ক্যাবিনেটে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমি যদি কোনও আইন ভঙ্গ করে থাকি তবে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে মামলা হবে। তবে আমার একার বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে? আইন ভঙ্গ তো ডিসিও করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি তাকে ফোন করে এসিল্যান্ডকে গালি দিয়েছি এই প্রতিবেদন ক্যাবিনেটে দিয়ে তিনিই তো আইনবিরোধী কাজ করেছেন। আমি যদি কোনও অশালীন শব্দ ব্যবহার করে থাকি, তিনি কি সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতে দিতে পারেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়ার জন্য তো আইন ভঙ্গকারী হিসেবে তার বিরুদ্ধে মামলা করা যায়। তাহলে তারাই তো আইনের বিরুদ্ধে কাজ করলেন।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, উপনির্বাচনে যারা পক্ষপাতিত্ব করেছে তাদের বিচার হোক এবং আমাকে নিয়ে যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা হচ্ছে সেটারও বিচার হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন–ভাঙ্গা উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন, ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফায়জুর রহমান প্রমুখ।