গত বুধবার ৫৩ আরোহীসহ নিখোঁজ ইন্দোনেশিয়ার সাবমেরিনটি সমুদ্র তলদেশে ডুবে গেছে। এর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে নৌবাহিনী। ফলে নিখোঁজ মানুষগুলো জীবিত উদ্ধারের আশাও শেষ। এছাড়া সেখানে অক্সিজেনের মজুতও শেষ হয়ে গিয়েছিল।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী ইন্দোনেশিয়ার বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এয়ার মার্শাল হাদি জাহজানতো শনিবার বলেছেন, উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষের মধ্যে এক বোতল লুব্রিকেন্ট এবং একটি যন্ত্র উদ্ধার হয়েছে যা সাবমেরিনের টর্পেডোর সুরক্ষা দিয়ে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘যে অবস্থান থেকে সাবমেরিনটির সঙ্গে শেষবার নিয়ন্ত্রণকক্ষের যোগাযোগ হয়েছিল তার পাশে এসব ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়েছে। এসব ওই সাবমেরিনের অংশ বলেই মনে হচ্ছে। সাবমেরিনটিতে চাপ তৈরি না হলেও এগুলো কখনোই বাইরে বের হয় না।’
ইন্দোনেশিয়ার মোট পাঁচটি সাবমেরিনের মধ্যে ‘কেআরআই নাঙ্গালা ৪০২’ হল একটি। গত বুধবার সাবমেরিনটি বালি দ্বীপের উপকুলের নিকটবর্তী সমুদ্রে একটি মহড়ায় অংশ নিচ্ছিল। টর্পেডো মহড়ার অনুমতি চাওয়ার কিছুক্ষণ পরই হঠাৎ সাবমেরিনটি নিখোঁজ হয়।
ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর প্রধান ইয়ুদু মারগোনো আজ শনিবার জানান, উদ্ধারকর্মীরা টর্পেডো স্ট্রেইটনারের একটি অংশ, একটি গ্রিজের বোতল; যা পেরিস্কোপে ব্যবহার করা হয় এবং সাবমেরিন থেকে প্রার্থনা করার কার্পেটও পানি থেকে উদ্ধার করেছেন।
নৌবাহিনী প্রধান বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ থাকার কারণে ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, আমরা যেসব ধ্বংসাবশেষ উদ্ধা করেছি তা ওই সাবমেরিনের। আগে আমরা সাবমেরিনটি নিখোঁজ ধরে নিয়ে তল্লাশি অভিযান চালালেও এখন তা ডুবে গেছে ভেবে তল্লাশি চালাবো।
মারগোনো আরও জানান, তারা স্ক্যানের মাধ্যমে ধারণা করছেন সাবমেরিনটি সমুদ্র তলদেশে ৮৫০ মিটার (২,৮৮৮ ফুট) নিচে ডুবে গেছে। কিন্তু সাবমেরিনটির যে ডিজাইন তাতে এটি ৫০০ মিটার (১,৬৪০ ফুট) গভীরে পর্যন্ত যেতে পারে। এর নিচে গেলে তা দুর্ঘটনা।
মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, সাগরের যে অংশে সাবমেরিনটি ডুবেছে বলে ধারণা করা হয়েছিল, সেখানে তেল ভাসতে দেখা গেছে। তেলের ট্যাংকে ছিদ্রের ফলেই সেটি এগোতে পারেনি এবং আরোহীদের সলিল সমাধি ঘটেছে।
নিখোঁজ ওই সাবমেরিন তথা আরোহীদের বাঁচাতে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতায় এগিয়ে এসে সেটি হন্য হয়ে খুঁজছিল যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া,মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। ফ্রান্স ও জার্মানিও সাবমেরিনটি অনুসন্ধান করতে সহায়তা পাঠাতে আগ্রহ দেখিয়েছিল।